পদ্মা সেতু থেকে খালেদা জিয়াকে নদীতে ফেলে দেয়া উচিত বলে করা মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘আপনি খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। তিনি দেশের জনগণের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং জনপ্রিয় নেত্রী; যিনি কখনো কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি।’
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক হত্যার হুমকির প্রতিবাদ’ শীর্ষক এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে দল ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী যোগ দেন।
এ সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ।
এসময় তিনি তাকে (খালেদা জিয়াকে)উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য তার দলের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ফখরুল বলেন, একজন প্রধানমন্ত্রী যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্য আসাটা অকল্পনীয়।
তিনি বলেন, ‘কোনও সভ্য দেশের মানুষ এ ধরনের মন্তব্য সহ্য করতে পারে না। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) আপনার মন্তব্যের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বলছি।’
বিএনপি নেতা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অন্যথায় জনগণ ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ না দিয়ে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।
এর আগে বুধবার আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা একবার বলেছিলেন পদ্মা সেতু প্যাচওয়ার্ক দিয়ে তৈরি হওয়ায় ব্যবহার করতে গিয়ে ভেঙে পড়বে। ‘এখন তাদের কী করা উচিত? তাদের পদ্মা সেতুতে নিয়ে যেতে হবে এবং সেখান থেকে নদীতে ঠুস করে ফেলে দেয়া উচিত।’
ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এমন আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, কারণ তিনি এখন তার ক্ষমতার অবসান ঘটতে দেখছেন।
খালেদার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, খালেদা জিয়া এখন খুবই অসুস্থ এবং বিদেশে যথাযথ চিকিৎসার সুযোগ না দিলে তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
ফখরুল বলেন, ‘এই সমাবেশ থেকে আমরা সরকারের কাছে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মুক্ত করতে এবং সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানাতে চাই।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দলীয় চেয়ারপার্সনকে গণতন্ত্রের আন্দোলনে বাধা দিতে তাকে ‘গৃহবন্দি’ করে রেখেছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
একই বছর তিনি আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫শে তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দেন।
তবে মুক্তির শর্ত ছিল, তিনি (খালেদা জিয়া) তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ রছরড় বাইরে যাবেন না।