খুলনায় বিএনপি’র সমাবেশে লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এতে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও পাঁচজন ফটো সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে।
সোমবার বেলা পৌনে ১২ টার দিকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ চলাকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে, পুলিশ চারজনকে আটকের কথা জানালেও বিএনপি নেতাদের দাবি,অন্তত ২৫জনকে আটক করা হয়েছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক শামসুজ্জামান চঞ্চল বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ চলছিল। এসময় নেতার্মীদের ওপর পুলিশ চড়াও হয় এবং লাঠি চার্জ করে। দু’দফায় পুলিশ হামলা চালায়। এতে নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া পুলিশ কয়েকজন নেতাকর্মীদের আটক করেছে।
এদিকে, পুলিশের লাঠিচার্জের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্থানীয় দৈনিক জন্মভূমি ও ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক দেবব্রত রায়, সময় টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন আব্দুল হালিম, যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরা পার্সন আমির সোহেল, প্রথম আলোর ফটো সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন ও এসএ টিভির ক্যামেরা পার্সন মোহাম্মদ ইব্রাহিম আহত হয়েছেন। তাদের জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে আহত ১৫
নগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে মারমুখী আচরণ শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার বলেছেন বিএনপি তাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য্ যে কোনো আন্দোলন করতে পারে। সেখানে পুলিশ কোন আক্রমণ করতে পারবে না। অনুমতি দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ আমাদের ওপর চড়াও হয়েছে।
তিনি বলেন, নেত্রীর মুক্তির জন্য মানবিক কর্মসূচীর আয়োজন করে নগর ও জেলা বিএনপি। সকাল থেকে প্রশাসন কার্যালয় ঘিরে রাখে। পুলিশকে তিনি সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। পুলিশ তা না করে সাধারণ নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে। জনতার রোষানলে পড়ে পুলিশ পিছু হাটতে বাধ্য হয়। পরে আবার তারা সমাবেশ শুরু করে। পরে সোয়া ১২ টার দিকে আবারও হামলা চালায়। নেতাকর্মীদের সরে যাওয়ার জন্য গুলি করার হুমকি দেয়। আমাকেও গুলি করার হুমকি দেয়। তৃতীয় দফায় এসে তারা আমাকেসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। এ ঘটনায় সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত ও ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ এ সময় টিয়ার সেল ছোঁড়ে। বিএনপি নেতাকর্মীদের টানা হেচড়া করে। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি মীর কায়সেদ আলী, তিনি নিজে, সিরাজুল হক নান্নু ৫জন সাংবাদিকসহ অর্ধশত আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, পুলিশ ২৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
এ বিষয়ে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, ৬ রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিএনপির ৪ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাটোরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ২০
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: বুধবার ডিসি অফিসে স্মারকলিপি দেবে বিএনপি