দেশে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তারা বলেন, জনগণের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ফখরুল বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতার জন্য বিএনপির নীতিনির্ধারকরা কঠোর সমালোচনা করেছেন। তারা মনে করছেন যে, সরকার সমর্থিত বিভিন্ন সিন্ডিকেটের বাজার কারসাজি এবং সড়ক-মহাসড়কে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের চাঁদাবাজির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।’
আরও পড়ুন: বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ: বিএনপি
তিনি বলেন, তাদের নীতিনির্ধারকরা দেখেছেন যে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বারবার বাড়ানোর কারণে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়াও পণ্যের দাম বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।
বৈঠকে ফখরুল আরও বলেন, দেখা গেছে সরকার সমর্থিত ব্যবসায়ীদের লোভ ও দুর্নীতির কারণে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, শাকসবজি, মাছ-মাংস-গ্যাস, জ্বালানি তেল ও পানিসহ সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক, শ্রমিক, নিম্ন আয়ের মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
তিনি বলেন, বৈঠকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের দুই কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় । দেশের বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির তীব্র সংকটের কারণে সেচ ব্যবস্থা না থাকায় তারা আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপিতে ‘নেতৃত্ব সংকট’ নেই, কাদেরকে ফখরুল
এর আগেও এখানে কৃষকরা আত্মহত্যা করেছে উল্লেখ করে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা অভিযোগ করেন, দুর্নীতি ও রাজনীতিকরণের কারণে সরকার কৃষকদের কৃষি উপকরণ, সেচ, সার ও বীজ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
ফখরুল বলেন, বৈঠকে এলপিজির দাম বাড়ানোর সরকারের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিএনপির নেতারা মনে করছেন মন্ত্রী এবং (প্রধানমন্ত্রীর) উপদেষ্টাদের জন্য ব্যবসা এবং লাভের সুযোগ তৈরি করতেই অযৌক্তিক উপায়ে দাম বৃদ্ধি করা হয়েছিল।’
বৈঠকে সরকারের কাছে অবিলম্বে এলপিজির দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার দাবি জানানো হয়।