বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা বিরোধী দল, জোট ও সংগঠনগুলো ঢাকাসহ জেলার অন্যান্য বিভাগে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বিরোধী দল ও সংগঠনগুলো বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পৃথকভাবে চার ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করবে।
৩০ ডিসেম্বর ৩৩টি বিরোধী দলের গণমিছিলের পর এটি হবে যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় কর্মসূচি।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, ২০০৭ সালের ১/১১ এর কথা মাথায় রেখে ১১ জানুয়ারি এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দেখা করেন।
সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ডিএমপি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে ডা. জাহিদ জানান, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তাদের দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের অনুমতি পেয়েছেন তারা।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, তারা বিএনপিকে যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটলে এর দায় তাদের (বিএনপি) নিতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার নতুন শপথ নিলেন ফখরুল
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাসসহ সিনিয়র নেতারা।
এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কে ১২ দলীয় জোট, পুরানা পল্টনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এফডিসি ক্রসিংয়ে এলডিপি, জাতীয় প্রেসক্লাবের পূর্ব পাশে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং আরামবাগে গণফোরাম (মন্টু) কর্মসূচি পালন করবে।
যদিও বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি এবং অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে গণমিছিল কর্মসূচিতে যোগ দেয়।
দলের একজন সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, কৌশলগত অবস্থানের কারণে জামায়াত অবস্থান কর্মসূচি পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অবস্থানের পর বিরোধী দল ও জোটগুলো যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
এছাড়া বিভিন্ন বিভাগে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বিএনপির পরিকল্পনা অনুযায়ী সিলেট বিভাগে কর্মসূচির নেতৃত্ব দেবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাজশাহীতে ড. আব্দুল মঈন খান, ময়মনসিংহে নজরুল ইসলাম খান, চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বরিশালে সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান, রংপুরে মাহমুদ টুকু, কুমিল্লায় ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খুলনায় শামসুজ্জামান দুদু ও ফরিদপুরে অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান।
এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর বিএনপিসহ ৩২টি সমমনা বিরোধী দল যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে রাজধানী ও রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনসহ তাদের ১০ দফা দাবিতে চাপ দেয়ার জন্য তারা তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে ১১ জানুয়ারি সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর সব বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল কর্মসূচি ও রংপুর সিটি নির্বাচনের কারণে বিএনপি ঢাকা ও রংপুরে এই কর্মসূচির দিন ৩০ ডিসেম্বর পুনঃনির্ধারণ করে।
আরও পড়ুন: বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে দুদক: মোশাররফ
বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের 'পূর্বশর্ত' প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ: গয়েশ্বর