বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা সেতুর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমি বিস্মিত হয়েছি। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, তিনি যেভাবেই ক্ষমতায় আসুক না কেন, এ ধরনের উক্তি করতে পারেন না। বেগম খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তাকে সরাসরি হত্যার হুমকির সামিল।
মির্জা ফখরুল ১৯ মে, বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের আয়োজনে এক সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দেয়া, এটা কখনও একটা স্বাভাবিক ব্যাপার হতে পারে না। আমি বিস্মিত হয়েছি এবং ক্ষুব্ধ হয়েছি এবং প্রচণ্ড নিন্দা জানাই। এরকম অরাজনৈতিক, অশালীন বক্তব্য আমরা কেউ কখনও আশা করতে পারি না। কিন্তু উনার স্বভাবই এটা। উনি এভাবেই কথা বলেন এবং এভাবেই তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অশালীন ভাষায় কথা বলেন, আচরণ করেন। এটা রাজনৈতিক কোন শিষ্টাচারের মধ্যে পরে না। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এ ধরনের একটি নেতৃত্ব জাতি আজকে সহ্য করছে।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক মন্দা এড়াতে ব্যয়বহুল মেগাপ্রকল্প বাদ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান বিএনপির
বিএনপি নেতা বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ইদানিং যে সকল কথাবার্তা বলে বেড়াচ্ছেন, এটা পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভুত, স্বাধীনতা সবকিছুর বাইরে, ভদ্রতার বাইরে কথাবার্তা বলছেন। এই কথাটা বলার অর্থই হচ্ছে একটি হুমকি দেয়ার মত। এটা কল্পনাও করা যায় না। এটা আমরা যারা সুস্থ চিন্তা ভাবনা করি তারা কখনও করতে পারি না। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এ ধরনের বক্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি, অন্যথায় আইনের কোন বিষয় থাকলে আমরা তা খতিয়ে দেখবো।
বিদেশিদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন- এমন অভিযোগের ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা তাদের পুরাতন স্বভাব, এটা উনারা সবসময় করে থাকেন। গত দুই নির্বাচন তারা বাক্স লুট করে নিয়ে গেছে। সব সময় জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করা হয়। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন না ঘটিয়ে এটা তারা করেছিল। সবসময় আ’লীগ মানুষের ওপর দোষ চাপায়। বরং তারাই বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। আমেরিকা গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাহায্য চেয়েছেন। নির্বাচনে আমাদের সহায়তা করবেন। আমরা বিদেশিদের কাছে এ ধরনের কাজ করিনি, করিওনা। ১/১১ তে তারাই সামরিক সরকার এনেছিল। সেখানেও তারাই ছিল। সেই সরকারকে তিনি সব রকম বৈধতা দিয়েছিলেন। তিনি করেছেনও তাই। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি আ’লীগ সরকারকে।
নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগামী নির্বাচনে কোন প্রস্তুতি নিচ্ছি না, তবে নির্বাচন কিভাবে হবে সেটা ভাবছি। আমাদের কথা খুব পরিষ্কার যে, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তার পরে নতুনভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার পরিবেশ করতে হবে। সরকারকে জনগণের দাবি মানতে বাধ্য করবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নূর, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মো. আব্দুল জব্বার, পৌর শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েসসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠের নেতারা।
আরও পড়ুন: নতুন ফসল উঠলেও ভুল নীতির কারণে চালের দাম বাড়ছে: বিএনপি