বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে ভারত ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ করছে।
তিনি বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর উগান্ডায় বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে।’
সোমবার (২২ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, জয়শঙ্করের বক্তব্য আংশিক সত্য।
আরও পড়ুন: আ. লীগের নতুন 'কৃষ্ণতম মেকি সরকার': রিজভী
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গভীর হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ও রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও ভোটের অধিকার হারিয়েছে।’
জনগণের ভোট ছাড়াই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করায় দেশের সর্বত্র নৈরাজ্য বিরাজ করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি এই নেতা।
তিনি দেশে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট গভীরতর হওয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন। ক্ষমতাসীন দল যেহেতু ব্যাপক উন্নয়ন করার কথা বলছে তাই এর পেছনের কারণ জানতে চান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশকে আমদানিনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
জনগণের ভোটাধিকার জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে রিজভী বলেন, জনগণের ক্ষমতায়ন ও ১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপিসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক দল রাজপথে সক্রিয়।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগের কবল থেকে দেশ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং জনগণের বঞ্চিত ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার প্রতারণামূলক নির্বাচন করতে গিয়ে তিন-চার মাস ধরে বিএনপির শত শত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের কেউ শারীরিক নির্যাতনে মারা গেছেন, আবার কেউ কেউ পঙ্গু হয়েছেন। হেফাজতে ও রিমান্ডে নির্যাতনের সময় জালিম নেতা-কর্মীদের নির্যাতন সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।’
তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কারাবন্দি নেতাদের তালিকা তুলে ধরেন এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তি দাবি করেন।