তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যে নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, আশেপাশের কোন দেশে এভাবে অংশগ্রহণমূলক ভাবে উদ্যোগ নেয়া হয় নাই। যেখানে ৩০০ মানুষের বেশি নাম জমা পড়েছে। সেখানে বিএনপির ঘরে বসে থাকলেও কোন লাভ নেই। নাম জমা না দিলেও কোনো যায় আসে না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁর জিলা স্কুল মাঠে নওগাঁ পৌর-আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি সরাসরি নাম জমা না দিয়ে গোপনে অন্যদের মাধ্যমে নাম জমা দিয়েছে এবং তাদের বুদ্ধিজীবীরা সেখানে গিয়েছে। দেশের মানুষ বলছেন তারা যে নামগুলো দিয়েছেন আসলে সেগুলো বিএনপির নাম।
হাছান মাহমুদ বলেন, এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে যার মাধ্যমে দেশে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যে নির্বাচনে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হবে। তাই বিএনপিকে অনুরোধ জানাব এই ভাবে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে কোন লাভ হবে না। আপনারা সরাসরি নাম না দিয়ে এখন আসামির কাঠগড়ায় দাড়িয়েছেন।
আরও পড়ুন: সাহায্য বন্ধের চিঠি লেখায় মির্জা ফখরুলের বিচার হওয়া দরকার: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। বিএনপি কখনোই খুশি হবে না। ফেরেশতা বসিয়ে কমিশন গঠন করা হলেও তারা মানবে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সমাজের সকল স্তরের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যখন সবাই গিয়ে সার্চ কমিটির সঙ্গে দেখা করলো, সবাই নাম জমা দিলো; বিএনপি তখন এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত না হয়ে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সংবাদ সম্মেলনে আমরা আসামির জবানবন্দি শুনেছি। সারা দেশের রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ সার্চ কমিটিতে নাম জমা দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি আজকে আসামির কাঠগড়ায়। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করার প্রক্রিয়াকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় সংবাদ সম্মেলন ডেকে একের পর এক মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে।’
সার্চ কমিটির মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন গঠন হবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সার্চ কমিটিতে নির্বাচন কমিশনের জন্য ৩০০ এর অধিক নাম জমা পড়েছে। যারা সার্চ কমিটিতে আছেন তাঁরা এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন যে কমিশন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। যে নির্বাচন কমিশন আগামীতে নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবেন এবং জনগণের রায়ে আওয়ামী লীগই আবারও ক্ষমতায় আসবে। বিএনপি কখনই খুশি হবে না। জয়ের নিশ্চিয়তা না দিলে ফেরেশতা বসিয়ে কমিশন গঠন করলেও বিএনপি খুশি হবে না। স্বয়ং আল্লাহ পাক যদি ফেরেশতা পাঠিয়ে কমিশন গঠন করে দেন তখন বিএনপি সেই ফেরেশতাদের সঙ্গে কথা বলবেন, আমরা জয়লাভ করব সেই নিশ্চিয়তা দিতে পারবেন কিনা? যদি ফেরেশতা তারা জয়লাভ করবে সেই নিশ্চিয়তা দিতে পারে তখন কেবল বিএনপি সেই কমিশন মানবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপির হুমকি শুনে মানুষ হাস্যরস করে: তথ্যমন্ত্রী
পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বসানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে সম্মেলনে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সব সময় সুদিন থাকবে সেটি মাথায় রাখবে না। সব সময় একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকবে সেটি মনে করার কোনো সুযোগ নেই। জনগণ যদি আমাদের পক্ষে রায় দেন, আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যারা ক্ষমতার হালুয়া-রুটি নেয়ার জন্য দল করে তাদের নেতৃত্বে আনা যাবে না। যারা পিঠ বাঁচানোর রাজনীতি করে তাদেরকে নেতৃত্বে আনা যাবে না। মূল নেতৃত্বে তাদের হাতেই থাকবে যারা ত্যাগী এবং পরীক্ষিত সৈনিক। যারা জায়গা দখল, যারা মাদকের সাথে যুক্ত, দল ক্ষমতায় গেলে উধ্যত আচরণ করে তাদের নেতৃত্বে আনা সমুচীন নয়। ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়। উধ্যত আচরণ করলে যতই উন্নয়ন করা হোক না কেন মানুষ ভোট দেবে না।’
এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক। সম্মেলনে প্রধন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সদস্য নূরুল ইসলাম, সাংসদ ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক, শহীদুজ্জামান সরকার, ছলিম উদ্দিন তরফদার, নিজাম উদ্দিন জলিল, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সুস্থতায় কর্মীদের স্বস্তি, নেতারা হতাশ: তথ্যমন্ত্রী