তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও রক্ষাকবচ হচ্ছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা লাভের ৫০ বছর পরেও স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি এখনো দেশে আস্ফালন করে। এখনো সক্রিয় এই অপশক্তি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে খুশি নয়। নানা সময় তারা দেশের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। তারা করোনার সময়, পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে এবং এখন তারা দেশের মানুষকে নিয়ে মশকরা শুরু করেছে। এই অপশক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।’
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। আমাদের দেশেও আমদানি নির্ভর কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু সেটি অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী এক কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছেন, যাতে কম মূল্যে তারা টিসিবি’র পণ্য কিনতে পারেন। এতে জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু বিএনপি ও কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী নামধারীর অস্বস্তি বেড়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ জাতিসংঘে ভোটদানে বিরত ছিল: তথ্যমন্ত্রী
‘যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় বিএনপির চেষ্টা গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা’ উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে গণহত্যা শুরু হয়েছিল। এটার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি,আমাদের সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যৌক্তিক। কিন্তু একটি দলের নেত্রী, যিনি আবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি যখন বলেন আসলে ত্রিশ লাখ মানুষ মারা যায় নাই, তখন এই গণহত্যার স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহল প্রশ্ন করে। বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার এই ধরণের বক্তব্য এবং যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য বিএনপির চেষ্টা গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা। না হয় আমরা গণহত্যার স্বীকৃতি সহজে পেতাম।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করে যে বাংলাদেশকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল; সেদেশকে যখন ধ্বংসস্তুপ থেকে পুনর্গঠিত করে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে যদি হত্যা না করা হতো তাহলে সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বঙ্গবন্ধু অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যদি সেই হারে থাকতো, তাহলে স্বাধীনতার ১৫-২০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হতো একটি উন্নত রাষ্ট্র।’
ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র। এদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন দুই হাজার ৬’শ ডলারের কাছাকাছি, যেটি ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশে পজিটিভ জিডিপি গ্রোথ হয়েছিল, তার মধ্যে বাংলাদেশ ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ। এতে দেশের মানুষ খুশি, সমস্ত পৃথিবী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিন্তু একটি পক্ষ প্রশংসা করতে পারে না। সেটি হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত এবং কিছু কিছু নামধারী বুদ্ধিজীবী। তারা এই উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশংসা করতে পারেন না।’
চট্টগ্রামের ষোলশহরে এলজিইডি অডিটোরিয়ামে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিতের পরিচালনায় উত্তর জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মঈন উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, প্রমুখ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।