দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বৃহস্পতিবার(৩০ নভেম্বর) দিনব্যাপী হরতাল পালন করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত তফসিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এবং পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিরোধী দলগুলোর এই হরতাল।
আরও পড়ুন: ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিতে বহিষ্কার অব্যাহত
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল চলবে।
এর আগে বুধবার সকালে বিরোধী দলগুলোর ২৪ ঘণ্টার অবরোধ চলাকালে কিছু যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় শেষ হওয়া এই কর্মসূচির সমর্থনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আকস্মিক মিছিল বের করেন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা।
এদিকে রিজভী সাহসের সঙ্গে রাজপথে নেমে বৃহস্পতিবারের হরতাল কর্মসূচি সফল করার জন্য বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বুধবার এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, 'বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বৃহস্পতিবারের হরতাল কর্মসূচি আন্তরিকভাবে পালন করবেন।’
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে হরতালের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানাতে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের দমনমূলক নীতির অংশ হিসেবে সরকার সারাদেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গ্রেপ্তার ও অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
রিজভী বলেন, 'বিএনপির নেতা-কর্মীরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তারা শরণার্থী ও নিঃস্ব হওয়ার মতো জীবন যাপন করছে। সংবিধানে বর্ণিত মানবাধিকার ভোগ করার কোনো সুযোগ তাদের নেই। মনে হচ্ছে হত্যা ও কারাবন্দী হওয়া তাদের ভাগ্যে লেখা আছে।’
তিনি বলেন, দেশ এখন শুধু শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের। ‘শেখ হাসিনার নীতি হয় আমাকে সমর্থন কর অথবা চুপ করে থাকো।’
বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের দমিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তার পেশীশক্তি ব্যবহারকারী কর্মীদের ছেড়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি দাবি করেন, বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির অন্তত ৩৬৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবারের অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য দেশের জনগণ ও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান রিজভী।
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে এবং নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে বিরোধী দলগুলো এ পর্যন্ত আট দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করেন তারা। এসময় বেশ কিছু যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা সহ তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ভোটে না এলেও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হচ্ছে: সালমান এফ রহমান