বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আপনারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেখেছেন, কেউ কি ভোট দিতে পেরেছিল, তারা নিজেরাই ভোট দিয়েছে। এবার আমরা ঠিক করছি, হারিয়ে দেয়ার নির্বাচনে আমরা আর যাচ্ছি না। পাবলিক যাকে ভোট দিবে সে নির্বাচিত হবে। সে কারণে পরিষ্কারভাবে ঘোষণা দিয়েছি যে, সরকারের এ সমস্ত প্রতারণা, ছলনা আর চলবে না।
তিনি বলেন, সরকারের গণতন্ত্র হচ্ছে চুরি করার, লুট করার গণতন্ত্র, টাকা পাচার করবার গণতন্ত্র, মানুষকে হত্যা করার গণতন্ত্র।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ফখরুলের
তিনি বলেন, প্রতিটি দ্রব্যের দাম বাড়ছে। তেলের দাম, গ্যাসের দাম বাড়ছে। তেল ও গ্যাস এর দাম বাড়লে সবকিছুর দাম বাড়তে থাকবে। বর্তমান সরকার ১৪ বছর ধরে আমাদের দেশের ওপরে, আমাদের বুকের ওপরে বসে আছে। এরা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এদের সঙ্গে জনগণের কোন সম্পর্ক নেই।
ফখরুল বলেন, রাস্তাগুলো ভেঙ্গে শেষ হয়ে গেছে। কেউ ভোট দিতে পারে না। সরকারি দলের নেতারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। এটা ফুলছে, শুধু ফুলেই যাচ্ছে। যারা একতলা বাড়ি ছিল না, তারা ১০ তলা বাড়ি করেছে। যারা স্যান্ডেল পরে বেড়াতে পারতো না, তারা আজ গাড়ি চালাচ্ছে। সারা দেশের চিত্র এটা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গরীব মানুষ আরও গরীব হচ্ছে, আর এরা ফুলে ফেপে বড়লোক হচ্ছে। এরা হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে নিয়ে পাচার করে দিচ্ছে। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে।এর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তার বিরুদ্ধে মামলা। কেউ প্রতিবাদ করতে পারবে না, কথা বলা যাবে না, করলেই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়, তাহলে এ দেশটা স্বাধীন করার কি দরকার ছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন রাস্তাতে দুর্ঘটনায় ১৫, ২০, একশ জন মানুষ মারা যাচ্ছেন। নাশকতা ও সন্ত্রাস করে তারা দেশকে একটা শ্মশানে পরিণত করেছে। আমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি। ফখরুল বলেন, মানুষ আজ জেগে উঠেছে। আমার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, আমার ভোট আমি দিতে চাই।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যিনি দেশের জন্য, সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন, সংগ্রাম করে গেছেন অথচ তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়িতে আটক করে রেখে দিয়েছেন। তার সঙ্গে সাধারণ কর্মীর মত আচরণ করেছেন, আজ তার জামিন হয় না। আর দেখেন হাজী সেলিমের, ক্যাসিনো সম্রাটের জামিন হয়েছে। জনগণের মূল্য তাদের কাছে নেই। আমরাও নির্বাচন চাই, তবে নির্বাচনের আগে এই শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি। সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যদি আমরা জয়লাভ করতে পারি তাহলে আমরা একটা জাতীয় সরকার গঠন করবো। সেখানে সব দলগুলোর প্রতিনিধি থাকবে। সেখানে আমরা ২৭টি প্রস্তাব দিয়েছি, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা গরীবদের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করবো। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কমিশন গঠন করবো।
জেলা বিএনপি অফিসের সামনে মির্জা ফখরুল এসময় দুস্থ, অসহায় ও শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর করিম, ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক, পয়গাম আলী, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরীফ, পৌর বিএনপির সভাপতি এ্যাড. আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক তারিক আদনানসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন: ঢাকা সফরে ডোনাল্ড লুর বক্তব্য নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে: ফখরুল