বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষ তাদের দুর্দশা লাঘবে সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বন্যা কবলিত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের দাবিতে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণায় ভয়াবহ বন্যার জন্য হাওর অঞ্চলে সরকারের অপরিকল্পিত বাঁধ ও সড়ক নির্মাণকে দায়ী করেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার মানুষ ভাত ও খাবারের জন্য হাহাকার করছে। চারপাশের সবকিছু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা খাবার পাবে কোথায়? তাদের কাছে খাবার পৌঁছাবে কী করে?’
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সরকার দেশের ৫০ লাখ বন্যা কবলিত মানুষের জন্য মাত্র এক দশমিক পাঁচ টাকা বরাদ্দ করেছে। অথচ ভারতীয় শিল্পী মিমি চক্রবর্তীকে তিন কোটি টাকায় বাংলাদেশে আনা হয়েছে।
বন্যার জন্য সরকার দায়ী উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এখন রঙিন আলোয় পদ্মা সেতু দেখবেন এবং মানুষকে ক্ষুধার্ত, অনাহারে ও জলমগ্ন রেখে আনন্দে মনের আনন্দে ক্ষমতায় থাকবেন। দেশের জনগণ এটা আর মেনে নেবে না।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাতিল করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান বিএনপির
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাওরাঞ্চলে অকাল বন্যার কারণ জানার চেষ্টা করেছেন কি? আমরা জানি, রাষ্ট্রের প্রভাবশালী এক কর্মকর্তার আত্মীয়-স্বজন হাওর এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ ও একটি সড়ক নির্মাণ করেছেন; যা রাষ্ট্রপতির বাড়ি বলে পরিচিত।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ ও রাস্তা নির্মাণের জন্য ৫০-৬০ লাখ মানুষ এখন বন্যার পানিতে আটকা পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জ পানিতে তলিয়ে গেছে, কিন্তু আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদ্মা সেতু নিয়ে আনন্দে উদ্বেলিত। আপনি পদ্মা সেতু নিয়ে মানুষের সঙ্গে তামাশা করছেন।’
রিজভী রাত ৮টার পরে দোকান ও শপিং মল বন্ধ করার পদক্ষেপের জন্যও সরকারের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষমতা রয়েছে বলে দাবি করে আসছে। ‘তবে আপনারা কেন রাত ৮টার পর দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছেন? কোথায় গেল আপনাদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ?’
তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি পদক্ষেপ নেয় এবং আইন ও নীতিমালা তৈরি করে। তারা এটা করে শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং তাদের অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি করতে।
আরও পড়ুন: বন্যা কবলিত এলাকাগুলোকে ‘বন্যাদুর্গত এলাকা’ ঘোষণার দাবি বিএনপির
অর্থমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংবিধান ও নৈতিকতার সংযোগ নেই: ফখরুল