পরিবহন ধর্মঘট ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠ শনিবার বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মীতে মুখরিত।
সমাবেশে যোগ দিতে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী ইতোমধ্যে শহরে পৌঁছে যাওয়ায় পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড ও মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে সিলেট।
আলিয়া মাদরাসা মাঠে দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে ইতোমধ্যেই দলীয় নেতাকর্মীরা মঞ্চ তৈরি করেছেন। স্থানীয় নেতারা জানান, বিভিন্ন বিভাগে আগের সমাবেশের মতোই নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই সমাবেশ শুরু হতে পারে।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে চলছে পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
সমাবেশে যোগ দিতে বিভাগীয় চার জেলা সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ইতোমধ্যে নগরীতে পৌঁছেছেন।
রাতে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসায় গিয়ে ইউএনবির এই প্রতিবেদক সমাবেশস্থলের বাইরে অস্থায়ী ক্যাম্পে বিএনপি নেতাকর্মীদের দেখতে পান।
গতকাল (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে সিলেটে পৌঁছেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশস্থলের উত্তর পাশে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত একটি মেডিকেল ক্যাম্পও স্থাপন করা হয়।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সিলেটে ১৯টি চেকপোস্ট বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্র বলছে, সিলেট নগরীর প্রবেশপথে ১৯টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শনিবার সাধারণ পোশাকে শত শত পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়া নিরাপত্তার জন্য চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের দল মোতায়েন করা হবে।
শুক্রবার সকাল থেকে সিলেট ও দেশের অন্যান্য জেলার মধ্যে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বিভাগের সব জেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ট্রেন, ট্রাক, লঞ্চ ও নৌকা, ছোট যানবাহন যেমন হিউম্যান হলার, অটোরিকশা, তিন চাকার গাড়ি, মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে বৃহস্পতিবার থেকে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদপুরের পর বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির ৭ম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিলেটে।
ময়মনসিংহ, বরিশাল, রংপুর, খুলনা ও ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের ধর্মঘট ডাকা হলেও দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক বাধা অতিক্রম করে সমাবেশে অংশ নেন।
চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা; ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পূর্বে পুলিশের অভিযানে পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে আগামী জাতীয় নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। আর এই দাবিটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে কারণ সংবিধান এটি হতে দেয় না।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট