বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রশ্নে সরকারকে দেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে মাথা নত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশের ১৮ কোটি মানুষের সমর্থন নেই এই সরকারের প্রতি... সরকারকে মাথা নত করতে হবে ১৮ কোটি মানুষের কাছে।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশগুলো তাদের দায়িত্ব হিসেবে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও জনগণের ভোটাধিকারের পক্ষে আওয়াজ তুলছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, সরকার বিদেশিদের কাছে আত্মসমর্পণ করছে কি না তা নিয়ে তাদের দল একদমই উদ্বিগ্ন নয়, কারণ জনগণই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিদেশিরা মানুষের পক্ষ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিরাপত্তাহীনতায় বাংলাদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ক্রমান্বয়ে দেশ ছাড়ছে: গয়েশ্বর
বিএনপির অন্যতম জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, তাদের দল গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে এবং বিদেশিরা গণতন্ত্রের কথা বলছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার চাই এবং তারা (বিদেশিরাও) দেশে ন্যায়বিচার চায়। তারা জনগণের অধিকার লঙ্ঘন দেখতে চায় না। তারা মানবাধিকারের কথা বলে এবং হত্যা ও জোরপূর্বক গুমের বিরুদ্ধে তাদের আওয়াজ তোলে...তারা তাদের নিজস্ব বিবেচনা থেকে আমাদের দেশের জনগণের পক্ষে কথা বলছে।’
গয়েশ্বর বলেন, বিএনপি সামাজিক ন্যায়বিচার, বহুদলীয় গণতন্ত্র, জনগণের ভোটের অধিকার এবং তাদের অন্যান্য সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে রাজপথে লড়াই করছি।
গয়েশ্বর বলেন, জিয়াউর রহমান ফ্রন্টে ৯মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জিয়াউর রহমানের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর তার জানাজায় প্রায় ৩০ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল, যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা-কর্মীরা জিয়ার শেরেবাংলা নগরের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
তারা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাতেও যোগ দেন।
আরও পড়ুন: গয়েশ্বরের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, আহমেদ আজম খান ও এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম খান, এডভোকেট আবুল মাল আবদুল মুন্না প্রমুখ। ভূঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিবুন নবী খান সোহেল, প্রচার বিষয়ক সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দলের বিভিন্ন ইউনিট ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও প্রয়াত রাষ্ট্রপতির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সারাদেশে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ১৯ দফা সনদ নিয়ে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে তাকে হত্যার পর তার বিধবা স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ৩০ মাসের বিল বকেয়া, বিএনপি নেতা গয়েশ্বরের বাসার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন