দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে যখন মনে চাচ্ছে গ্যাস, বিদ্যুত ও পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাণিজ্য মন্দা এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দর পতনের মধ্যেই দেশে সব পর্যায়ে বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা মূল্য বাড়ানোর একমাত্র কারণ হলো লুটপাট। দামবৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রাহকদের পকেট থেকে বছরে দুই হাজার কোটি টাকা লুটে নেবে আওয়ামী সিন্ডিকেট।’
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিদ্যুতের দাম খুচরা পর্যায়ে ৫.৩ শতাংশ এবং পাইকারি পর্যায়ে ৮.৪ শতাংশ বৃদ্ধি করে। নতুন এ দাম ১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে বলে বিইআরসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।
এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার এক দশকের মধ্যে নবমবারের মতো বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে সাধারণ মানুষের। শিল্প মালিকদেরও ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ দশা।
‘দেশীয় শিল্পকারখানা ধ্বংস করে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধের মাধ্যমে দেশকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা হারাচ্ছে শত শত প্রতিষ্ঠান,’ যোগ করেন তিনি।
রিজভী মনে করেন যে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্পের শক্তি ধ্বংস করে দেবে। ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। সেচ বিদ্যুতের দাম বাড়ায় কৃষিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যসহ জীবনযাত্রার সব খরচ বেড়ে যাবে। মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে।
এমন পরিস্থিতিতে এ ‘গণবিরোধী’ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি নেতা। অন্যথায়, বিদ্যুত ও ওয়াসার পানির দামবৃদ্ধিসহ ‘গণবিরোধী’ সব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে সতর্ক করে দেন তিনি।