দীর্ঘ সাতমাস বন্ধ থাকার পর কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় টেকনাফের দমদমিয়া থেকে ৩১০ জন পর্যটক নিয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন দ্বীপের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জাহাজটি সেন্ট মার্টিন জেটিতে পৌঁছে। জাহাজ থেকে নামতেই পর্যটকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর আহমদের নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দারা।
টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, মৌসুমের শুরুতে কেয়ারী ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন জাহাজ কর্তৃপক্ষকে পরীক্ষামূলকভাবে পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিন্স- টেকনাফ নৌরুটে চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ জাহাজে করে প্রথম দিন ৩১০ জন যাত্রী সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রওনা দিয়েছেন এবং তারা বিকালে যথারীতি সেন্ট মার্টিন থেকে টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
তিনি বলেন, পর্যটকদের উঠা-নামার সুবিধার্থে দ্বীপের জেটি সংস্কার করা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে এ পথে চলাচলকারী অন্যান্য জাহাজও অনুমতি সাপেক্ষে চলাচল শুরু করতে পারে।
আরও পড়ুন: সমুদ্রতীরে ডলফিনের খেলা, বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে পর্যটকদের
এদিকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের খবরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা টেকনাফ ছুটে আসেন। কিন্তু প্রথম দিন একটি মাত্র জাহাজে ধারণ ক্ষমতার কারণে অনেক পর্যটক টিকিট না পেয়ে প্রবাল দ্বীপে যেতে পারেননি।
তবে প্রথম দিনে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার সুযোগ পাওয়া পর্যটকদের খুশির শেষ নেই। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী তাবাসসুম জান্নাত বলেন, ‘কয়েক দিন আগে গণমাধ্যমে সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরুর খবর পেয়ে পরিবারের সবার সাথে চলে এসেছি। এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য্য উপভোগ করবো সবাই।’
সেন্ট মার্টিনে পর্যটক আসার খবরে দ্বীপের হোটেল মোটেলগুলো আগে থেকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। পর্যটন শিল্পে যুক্ত ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের সেবা দিতে নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া দ্বীপের বাসিন্দাদের মধ্যে যাদের জীবন জীবিকা পর্যটক নির্ভর তারা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ড ডে ট্যুর: একদিনে ঘুরে আসুন চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মহামায়া লেক
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, মৌসুমের প্রথম দিনে দ্বীপে আগত পর্যটকদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করেছি। পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের আগে থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। তাছাড়া কোথাও যেন পর্যটকরা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইনের টেকনাফের ব্যবস্থাপক শাহ আলম বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পাওয়ায় প্রথমদিনে ৩১০ জন পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাত্রা শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে না এবং যাত্রীদের কাছ থেকে টিকেটের অতিরিক্ত মূল্য নেয়া হচ্ছে না। আমরা চাচ্ছি পর্যটকরা দ্বীপে আসুক, ভ্রমণ করার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পকে আরও বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিক। অন্য বছরের তুলনায় এ বছরে আরও বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণে আসবেন বলে আশা করছি।
আরও পড়ুন: বগালেক, দার্জিলিং পাড়া হয়ে কেওক্রাডং মানেই হারিয়ে যাওয়া রূপকথার রাজ্যে