ঢাকায় পরিবেশ-বান্ধব জীবনযাপন প্রথমে কিছুটা জটিল হতে পারে তবে একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে এ পরিবর্তনগুলো অবশ্যই স্থায়ী প্রভাব ফেলবে।
বাসা থেকে বক্স ও কাপ নিয়ে যাওয়া
একবার ব্যবহৃত স্টায়ারফোমের প্যাকেট এবং প্লাস্টিকের কাপগুলো যে কতটা বর্জ্য তৈরি করে তা অবাক করার মতো বিষয়। কিন্তু এখন কফি খেতে বা রেস্তোরাঁ থেকে খাবার নেয়ার জন্য আরও বেশি সংখ্যক মানুষ তাদের বাসা থেকে নিজস্ব বক্স ও কাপ নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনুসরণ করছেন। এ ছোট্ট কাজটি পুরো বিশ্বে পার্থক্য তৈরি করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: নীরব এলাকা সচিবালয়ে শব্দদূষণ বেড়েছে ৭.৮ শতাংশ, গবেষণায় প্রকাশ
কিন্তু বাসা থেকে বক্স ও কাপ নিয়ে যাওয়া আপনার কাছে ঝামেলার মনে হতে পারে এবং বাসায় ফিরে এগুলো পরিষ্কার করার চিন্তা আপনাকে এ পদ্ধতিটি গ্রহণ করতে বাধা দিতে পারে। তবে, এতে করে বর্জ্য হ্রাসের যে একটি ব্যাপার রয়েছে তা-ই তো বয়ে আনবে ইতিবাচক পার্থক্য।
এছাড়া, পুনরায় ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বোতল বা ফ্লাস্ক ব্যবহার করা বেশি পরিবেশ-বান্ধব।
বাজারের ব্যাগ নিয়ে যাওয়া
অনেক দেশ প্লাস্টিকের ব্যাগ বন্ধ করার বিষয়টি এত বড় আকারে উপলব্ধি করছে যে তাদের মধ্যে ৭৬ দেশ পুরোপুরি এর ব্যাপক বিতরণ নিষিদ্ধ করেছে। ২০০২ সালে এ আদেশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম রয়েছে। বর্জ্য হিসেবে প্লাস্টিকের ব্যাগগুলো পরিবেশ দূষণ এবং প্রাণীদের জীবনের প্রতি প্রত্যক্ষ হুমকিতে অবদান রাখে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বায়ু দূষণ কমাতে কঠোর লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি মন্ত্রীর
শীতে কোভিডের ঢেউ ঠেকাতে বায়ু দূষণ কমাতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা
আপনার নিজের কাপড়ের বা পাটের ব্যাগ অনেক ভালো উপায় হতে পারে। তবে, পুনরায় ব্যবহারযোগ্য এমন ব্যাগ থেকে অনেক সময় কাঁচাবাজারের দাগ বা গন্ধ ধুয়ে ফেলতে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু ভালো মানের দীর্ঘস্থায়ী ব্যাগের ক্ষেত্রে এ সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
পানি এবং বিদ্যুৎ সঞ্চয়
বিদ্যুৎ অপচয়ের পরিণতি জনগণের ধারণা থেকেও আরও মারাত্মক। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যখন তাপ উৎপন্ন করা হয় তখনই চলে আসে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন এবং কার্বন নিঃসরণ। ভুলে সারা রাত আলো জ্বালিয়ে রাখা বা জানালা খোলা রেখে এয়ার কন্ডিশনারটি চালু রাখার মাঝে হয়ত খুব খারাপ কিছু মনে হয় না। কিন্তু এ ধরনের ছোটখাট অসচেতনতা অপ্রয়োজনীয় দূষণ বাড়িয়ে তুলে।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংকট হিসেবে দেখতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বায়ু দূষণে ১.৮ বছর আয়ু কমছে বাংলাদেশিদের
আর পানির অপচয় সৃষ্টি করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। অনেকটা বিদ্যুতের মতো, পানীয় জলের উৎসের ব্যবহার শুরুতে খুব একটা সমস্যাজনক মনে হয় না। কিন্তু সম্মিলিতভাবে বয়ে আসতে পারে বড় ধরনের পরিণতি।
পানি এবং বিদ্যুতের বিষয়ে সচেতন থাকার জন্য আপনার বাইরে যাওয়ার খুব দরকার নেই। এলইডি লাইট বাল্ব ব্যবহার, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এয়ার কন্ডিশনারে চলে যাওয়া, পরিবেশবান্ধব ওয়াটার হিটার ব্যবহার এবং ডিশ ওয়াশিং মেশিনের ব্যবহার কমানোর মতো সহজ উপায়গুলোই হলো অতিরিক্ত সময় বা প্রচেষ্টা না দিয়েই পানি এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারে সঞ্চয়ী হওয়া। পানিতে সাবান দিয়ে থালা-বাসন পরিষ্কার করার মাঝের সময়টিতে ট্যাপটি পুনরায় বন্ধ করে দেয়া আপনার একটি ভালো অভ্যাসে পরিণত হতে পারে।