শনিবার তিনি বলেন, ‘মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি দীর্ঘ সময় টিকে থাকে। দুই সরকার ও দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো দুই দেশের জনগণের মধ্যকার বন্ধন চিরদিন বহাল থাকবে।’
রাজধানীর কসমস সেন্টারে চলমান দুই মাসব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী ‘শেখ হাসিনা: অন দ্য রাইট সাইড অব হিস্ট্রি’ দেখতে এসে রাষ্ট্রদূত ভিয়েত চিয়েন দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি তুলে ধরার প্রতি জোর দেন।
কসমস গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ জামিল খান রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এবং প্রদর্শনীর বিষয়ে অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: কসমস সেন্টারে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে প্রদর্শনী দেখলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত
শিল্পকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে: দোরাইস্বামী
ভিয়েত চিয়েন বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমার এখানে অবস্থানকালে আমি এ ধরনের (মানুষের সাথে মানুষের) সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করব। তাই, এ ক্ষেত্রে আমি ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের শিল্পীদের মাঝে সম্পর্ক সুদৃঢ় করার চেষ্টা নেব।’
তিনি জানান, ভিয়েতনামে খুব অল্প মানুষই বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানেন। সেই সাথে বাংলাদেশের জনগণও ভিয়েতনামের সংস্কৃতি সম্পর্কে তেমন অবগত নন।
‘কেন আমরা পরস্পরকে উপস্থাপন করা, পরস্পরকে জানা এবং পরস্পরের কাছে আসছি না? আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার হবে, আমরা কাছে আসব, পরস্পরের বন্ধু হব এবং একসাথে সমৃদ্ধি করব। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তা করতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাব,’ বলেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এমন চমৎকার প্রদর্শনীর আয়োজন এবং তাকে জানান সুযোগ করে দেয়ার জন্য গ্যালারি কসমসকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়নে শেখ হাসিনার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত ভিয়েত চিয়েন।
তিনি কসমস গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউএনবি’র প্রশংসাও করেন এবং বলেন যে বাংলাদেশ সম্পর্কে সংবাদ ও তথ্য জানতে তিনি নিয়মিত সাইটটি ঘুরে দেখেন।
‘শিল্প শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’
মাসুদ খান জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বছরব্যাপী কর্মসূচির অংশ এ প্রদর্শনী।
তিনি বলেন, ‘শিল্প আমাদের কল্পনাকে ঝলক দেখায় এবং সমাজের সবকিছুকে আরও সুন্দর করে তুলে। এখানকার শিল্পকর্মগুলো খুবই অনন্য এবং নিজেদের মতো করে স্বতন্ত্র।’
তিনি জানান, প্রদর্শনীটি চালিয়ে নেয়ার জন্য আয়োজকরা অনেক অনুরোধ পাওয়ায় তা চলমান রাখতে এটি অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়া হবে।
‘এ জন্য আমরা অনেক খুশি,’ বলেন মাসুদ খান।
আরও পড়ুন: গ্যালারি কসমসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘটনাবহুল জীবন প্রদর্শিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গ্যালারি কসমসের আর্ট ক্যাম্প
গত ডিসেম্বর থেকে প্রদর্শনীটি চালমান রাখতে সব ধরনের সমর্থনের জন্য তিনি গ্যালারি কসমস টিমের শিল্পীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার জন্য শিল্প হয়ত অপরিহার্য নয় কিন্তু আমি মনে করি আমাদের টিকে থাকার জন্য শেষ পর্যন্ত এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
পরে, রাষ্ট্রদূত কসমস সেন্টারে কসমস আতেলিয়ার৭১, ইউএনবি নিউজরুম ও ওয়াইল্ডটিম কার্যালয়সহ কসমস গ্রুপের বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এ শিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
কসমস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় কসমস আতেলিয়ার৭১-এর সাথে যৌথভাবে গ্যালারি কসমস বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এক আর্ট ক্যাম্পের আয়োজন করছিল।
প্রখ্যাত শিল্পী অলকেশ ঘোষ, আহমেদ শামসুদ্দোহা, শেখ আফজাল, নাসির আলী মামুন, বিশ্বজিৎ গোস্বামী, রত্নেশ্বর শুত্রধর, রাসেল কান্তি, মনজুর রশিদ, সৌরভ চৌধুরী, মানিক বনিক, জয়ন্ত সরকার, আজমল হোসেন, ফিদা হোসেন, অমিত নন্দী, দিদারুল লিমন, তামান্না আফরোজ, ফাহিম চৌধুরী, মিসকাতুল আবির, প্রসূন হালদার, হাসুরা আক্তার রুমকি ও সুরভী আক্তার আর্ট ক্যাম্পে অংশ নেন। সেখানে অংশ নিয়ে তাদের আঁকা শিল্পকর্মগুলো দিয়েই প্রদর্শনীটি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে শিল্পীরা চমৎকার কাজ করেছেন: তথ্যমন্ত্রী
গ্যালারি কসমসের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রথম ভার্চুয়াল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
কসমস সেন্টারে প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এখানে একসাথে মাত্র ২০ জন দর্শনার্থী পরিদর্শনের সুযোগ পাচ্ছেন।
এর আগে, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার ও ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নফর এ শিল্প প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন।
প্রদর্শনীতে আসা দর্শনার্থীদের সব সময় মাস্ক পরে থাকা এবং পরস্পর থেকে যথাযথ দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।