শরতের সাদা মেঘ দিয়ে আকাশ ক্যানভাসে আঁকিবুকি করার কোন দিন, অথবা শীতের কোন রৌদ্রস্নানের দিন! দীঘিনালা ছাড়িয়ে রাঙামাটির ছাদের খোঁজে কেউ এলে, রুইলুই ও কংলাক পাড়ার লুসাই, ত্রিপুরা বা পাংখোয়ারা এখন আর অবাক হয়না। যে কোন বইপোকার কাছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়নটি হয়ত শুধুই একটি স্থানের নাম। কিন্তু ভারতের মিজোরাম সীমান্ত ঘেষা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উচু সাজেক ভ্যালির মেঘ ছোঁয়ার জন্য কোন পর্বতপ্রেমীর ছেলেমানুষী কোন কিছু দিয়েই তুলনা করা যাবে না। সেই পর্বতপ্রেমীদের জন্যই সাজেক ভ্যালির এই ভ্রমণ গাইড।
সাজেক ভ্যালির প্রাকৃতিক নৈসর্গ
লুসাই পাহাড় থেকে কর্ণফুলী স্রোতকে অনুসরণ করে এগোলে দেখা মিলবে সাজেক নদীর। আর সেই সাথে হৃদয়ঙ্গম হবে নৈসর্গিক এই উপত্যকার নামকরণের সার্থকতা। চান্দের গাড়ি চড়ে পাহাড়ী রাস্তা ধরে এগোনোর সময় আদিবাসী শিশুদের সঙ্গে স্বাগতম জানাবে পাহাড়ের ঢালের সবুজ বন। প্রবেশদ্বারের রুইলুইপাড়া থেকে সাজেকের শেষ প্রান্ত কংলাকপাড়ার মাঝে চোখ জুড়াবে উপত্যকা গ্রাম, হাজাছড়া ঝর্ণা, কমলক ঝর্ণা, দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও বনবিহার আর দুরের নিস্তব্ধ নীলিমা। বিজিবি ক্যাম্পের হেলিপ্যাড থেকে মেঘের সমুদ্রে প্লাবিত সূর্যোদয়ের দৃশ্য যে কোন সতর্ক দৃষ্টিকে ভুলিয়ে দিবে যে সে দাড়িয়ে আছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজিবি ক্যাম্পে। সূর্যাস্তের সময় আবার সেই রাজকীয় অগ্নিকুণ্ডের আত্মবিসর্জনে পুরো সাজেককে মনে হবে এক অপার্থিব তোরণ। রাতের আকাশে কোটি তারার লন্ঠন ছায়াপথ জুড়ে জমিয়ে রাখা মহাজাগতিক চলচ্চিত্রের বায়োস্কোপ দেখাবে।
মধ্য আগস্টের সকাল থেকে শুরু করে প্রথম নভেম্বরের প্রথম কুয়াশা; যে কোন দিন হতে পারে পর্বতপ্রেমীদের জন্য এমন স্বপ্নের দিন।
আরও পড়ুন: নাজমুন নাহার: পৃথিবীর ১৫০তম দেশ ভ্রমণ করে ইতিহাস সৃষ্টিকারী বাংলাদেশি পরিব্রাজক