কুষ্টিয়া জেলার মিরপুরে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী আবু বক্করকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত সাত বছর আগে মিরপুর উপজেলার খয়েরপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে পলি খাতুনের সাথে একই গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আবু বক্করের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ পলি খাতুনের ওপর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক নির্যাতন চালাত।
গৃহবধূ পলির বড় ভাই আক্তারুজ্জামান বাবু জানান, যৌতুকের জন্য বোনকে শারীরিক নির্যাতন করার কথা জানতে পেরে তারা বোনের সুখের কথা ভেবে কয়েক দফায় আবু বক্করের হাতে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার তুলে দেন। কিন্তু এতেও তাদের মন ভরে নি। যৌতুকের জন্য আবারও দফায় দফায় গৃহবধূ পলি খাতুনের ওপর নির্যাতন চলতে থাকে। এরই মধ্যে পলির স্বামী মাদক ব্যবসা ও নিয়মিত মাদক সেবন শুরু করে।
আরও পড়ুনঃ হবিগঞ্জে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন
গত ২ জুন মদ্যপ অবস্থায় আবু বক্কর যৌতুকের টাকার জন্য পলি খাতুনের উপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। পলি খাতুন বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে স্বামী আবু বক্কর ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলিকে সারারাত হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পলিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পলির ভাই আক্তারুজ্জামান বাবুসহ পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছুটে আসলে পলির স্বামী আবু বক্করসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন।
শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে পলি খাতুনকে ঢাকার নিউরোসাইন্স হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। গত দশ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে গত শুক্রবার বিকালে পলি মৃত্যুবরণ করে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত পলির ভাই আকতারুজ্জামান বাবু বাদী হয়ে পলির স্বামী আবু বক্কর, শ্বশুর আইয়ুব আলী, শ্বাশুড়ি আকলিমা খাতুনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দয়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ নিহত ঘাতক স্বামী আবু বক্করকে গ্রেপ্তার করেছে। এজাহারভুক্ত অপর আসামিদেরও গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।