চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো বিরল মিউকরমাইকোসিসে (ব্ল্যাক ফাঙ্গাস) এক নারী আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হবার পর ষাটোর্ধ্ব ওই নারীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়। বিরল ছত্রাকজনিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে চার দিন ধরে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৬ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুযত পাল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে ওই নারী চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘উপসর্গ দেখে আমরা সন্দেহ করেছিলাম, ওই নারী মিউকরমাইকোসিস রোগে আক্রান্ত। আজ তার বায়োপসি রিপোর্টে এটি নিশ্চিত হয়েছি।’
আরও পড়ুন: দেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু
আক্রান্ত ওই নারীর নাম ফেরদৌসি বেগম (৬০)। তার গ্রামের বাড়ির চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায়।
জানা যায়, গত ২৫ জুন থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন গৃহিনী ফেরদৌস বেগম। চলতি মাসের ৩ জুলাই তার করোনা শনাক্ত হয়। ১৫ জুলাই করোনা নেগেটিভ হলেও তার নানা শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়। পরে স্বজনরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
চমেকে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এই রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু ২০ হাজার ছাড়াল, একদিনেই ১৬ হাজারের বেশি শনাক্ত
আক্রান্ত ওই নারীর ছেলে মো. বেলাল হোসাইন বলেন, ‘পাঁচদিন আগে করোনায় আমি আব্বাকে হারিয়েছি। এখন আমার মা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার জন্য এমপোটেরিসিন-বি ইনজেকশনটি খুঁজছি। কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছে না। প্লিজ আপনারা এই ওষুধের সন্ধান দিন। যত টাকা লাগে আমরা দেব। আমার মাকে বাঁচাতে চাই।’
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার বার্ডেম হাসপাতালে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ রোধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সিভিল সার্জন জানান, বিরল এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। তাই সরকারিভাবে আপাতত ইনজেকশন যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তবে রোগী বাড়লে সরকারি নির্দেশনা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
চিকিৎসকরা বলছেন, খুব কাছাকাছি দীর্ঘ সময় ধরে সংস্পর্শে না গেলে এই রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কম। মূলত কোভিড আক্রান্তদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এই রোগে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি।