অভিযুক্ত ফাহাদ বিন ইহসান তারেক (২৩) উপজেলা শহরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন ও অপহৃত রায়হান এহসান রিহান (৫) তারই ছোট ভাই।
আরও পড়ুন: অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়: সিএমপি কমিশনারের দেহরক্ষীসহ ৬ পুলিশ গ্রেপ্তার
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন রনি বলেন, পরিবারকে চাপ দিয়ে টাকা নিতে তারেক এমনটা করেছেন। তাকে কৌশলে সোমবার বিকালে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়।
থানার ওসি (তদন্ত) আবদুর রশিদ জানান, এ ঘটনায় ছেলের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন বাবা মো. আবু তাহের।
ভাই রিহানকে অপহরণের পর বাসায় চিঠি লিখেন তারেক।
আরও পড়ুন: অপহরণ মামলায় ফেনীতে ইউপি চেয়ারম্যান রিমান্ডে
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি শুধু এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। আমি সে দিন কিডনি বিক্রি করেছিলাম। ঠিক ওই দিন থেকে আপনারা আমাকে অবহেলা করা শুরু করছেন। অথচ আপনাদের অত্যাচারে আমি বাধ্য হয়েছি, নিজের অঙ্গ বিক্রি করতে। আপনারা আমার জীবনের সব শেষ করে দিয়েছেন। আমার স্ত্রী আজ অন্যের সঙ্গী, আমার সন্তানের মুখ পর্যন্ত আমি আজও দেখিনি। আমার জীবন নষ্ট করে আপনারা শান্তিতে থাকবেন, ভাবলেন কীভাবে!’
আরও পড়ুন: পোশাক শ্রমিককে অপহরণের অভিযোগে গাজীপুরে আটক ২
‘আমার মতো এবার আপনাদের ছোট ছেলেও কিডনি দেবে...আপনারা আপনাদের টাকা-পয়সা নিয়ে থাকেন। আমার কিডনি বিক্রির সময় যেমন কিছু করতে পারেন নাই, এবারও পারবেন না আপনাদের ছোট ছেলের বেলায়,’ লিখেন তারেক।
এ চিঠির সূত্র ধরে পাঁচ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে কৌশলে নাগালের মধ্যে এনে হাজীগঞ্জ থানার এসআই মোশারফ তাকে আটক করেন।
তারেকের মা ফরিদা সুলতানা শিখা বলেন, ‘আমার বড় ছেলে আপন ছোট ভাইয়ের সাথে এমন করবে এটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।’
আরও পড়ুন: অপহরণের ৭ দিন পর সাভারে পোশাক শ্রমিকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
অভিযুক্ত তারেক বলেন, ‘মায়ের কারণে আমার স্ত্রী আজ অন্যের। আমি আমার কিডনি বিক্রি করে ব্যবসা শুরু করেছিলাম। তবুও আমার গর্ভধারিণী মা আমাকে ব্যবসার জন্য টাকা না দিয়ে আরেকজনকে আমার সামনে ২০ লাখ টাকা হাওলাত (ঋণ) দেয় ব্যবসা করার জন্য। এটা অপমান। আমি স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে আমার মায়ের জন্য আজ পথে পথে হাঁটছি। তারা আমাকে বাধ্য করেছে এমন ঘটনা ঘটাতে। আমি ছোট ভাইকে অপহরণ করেছি শুধুমাত্র টাকার জন্য। কিডনি বিক্রির কথা চিঠিতে লিখে মা-বাবাকে ভয় দেখিয়ে ছিলাম।’
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে অপহরণের ৩ দিন পর শিশুর লাশ উদ্ধার
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোশারফ বলেন, ‘অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’