শনিবার মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে টিকাদান কার্যক্রম বিষয়ে বিশেষ সভায় তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিলে কোনো ভয় নেই, বরং ভ্যাকসিন না নিলেই ভয়। ভ্যাকসিন এখন একটি বড় অস্ত্র এই করোনার জন্য।’
টিকাদান বিষয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রশংসা পাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেক রাষ্ট্র এখনও ভ্যাকসিন পায়নি, আগামী দুই-তিন মাসেও পাবে কি না সন্দেহ আছে। তার উদাহরণ থাইল্যান্ড, তারা ভ্যাকসিনের এখনও ব্যবস্থা করতে পারেনি। মালয়েশিয়া পারেনি, সিঙ্গাপুর পারেনি, শ্রীলঙ্কা পারেনি, বড় বড় রাষ্ট্ররা পারেনি। বিশ্বের ২৩ নাম্বার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করেছে। ঘরে বসে শুধু সমালোচনা করা যায়, বাস্তবতা অনেক কঠিন।’
আরও পড়ুন: কোভিড প্রতিরোধে টিকা যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়
খুলনায় প্রথম ধাপে টিকা পাবেন ৯৭ হাজার ২৩০ জন
টিকা এমনি এমনি আসেনি জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘গত ছয় মাস যাবৎ এই ভ্যাকসিন আনার জন্য পেছনে লেগে থাকতে হয়েছে। যারা যারা ভ্যাকসিন তৈরি করছে সকলকে আমরা পত্র পাঠিয়েছি। সবার সাথে ভিডিও কনফারেন্স করেছি। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অন্যতম সেরা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক। পৃথিবীর ৬০ ভাগ ভ্যাকসিন এ ইনস্টিটিউটে তৈরি হয়। সেখান থেকে আমরা ভ্যাকসিনটি আনার ব্যবস্থা করেছি। অনেক দেনদরবার হয়েছে এ নিয়ে। ভ্যাকসিন আসার আগ মূহূর্তে সব দেশের চাপ পড়েছে। আমরা আগে আগে বুকিং দিয়েছি, আগে আগে টাকা পাঠিয়েছি, নেগোশিয়েট করেছি, অন্যরা এখন চাপ সৃষ্টি করছে।’
বাংলাদেশ টিকার তিন কোটি ডোজের টাকা ইতোমধ্যে দিয়ে দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০ লাখ ভ্যাকসিন ভারত সরকার বাংলাদেশের মানুষকে উপহার হিসেবে দিয়েছে। আমাদের কাছে এই মূহূর্তে ৭০ লাখ ভ্যাকসিন আছে। ডব্লিউএইচওতে আমাদের সাড়ে ছয় কোটি ভ্যাকসিনের অর্ডার দেয়া আছে। যখন পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন থাকবে তখন তারা আমাদের সরবরাহ করবে।’
টিকাদানের পদ্ধতি সম্পর্কে মন্ত্রী জানান, সম্মুখ সারির ব্যক্তিদের আগে টিকা দেয়া হবে। তারপরে পর্যায়ক্রমে যারা বয়সে সিনিয়র তাদের দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: করোনা: ঢাকার ৫ হাসপাতালে টিকা নিলেন আরও ৫৪১ জন
প্রাথমিকভাবে পঞ্চগড়ে ২১৬০০ জন করোনার টিকা পাচ্ছেন
‘কোভিড আমরা সফলতার সাথে মোকবেলা করেছি, ভ্যাকসিনও আমরা সফলতার সাথে দিতে পারব। যে কোনো কাজ করতে গেলে কিছু সমালোচক থাকেই। ভ্যাকসিনের বিষয়ে বিরূপ প্রচার-প্রচারণা আছে। প্রতিটি ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। তাই বলে কি ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি? ভ্যাকসিনের ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না এ কথা আমি বলব না। ভ্যাকসিন দিলে পরে জ্বর হতে পারে, এটা স্বাভাবিক, মাথা ব্যথা হতে পারে, জায়গা একটু ফুলে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত যতজনকে ভ্যাকসিন দিয়েছি সকলেই ভালো আছেন। যারা যারা এ ভ্যাকসিন দিচ্ছে যেমন ইউরোপে, ভারতে সব জায়গাই আমরা খোঁজখবর নিয়েছি, তারা সকলেই ভালো আছেন,’ বলেন মন্ত্রী।
তিনি পরে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে রক্ষিত মানিকগঞ্জের জন্য আনা ৪৮ হাজার টিকার ডোজ পরিদর্শন করেন।