মানিকগঞ্জে জেলা হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে অনেক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন মেঝেতে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, রোগী বেশি হওয়ার কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিমে খাচ্ছেন তারা। আবার জায়গা না পেয়ে অনেক রোগী অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বাড়তি চাপ সামলাতে অন্য ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগী সরানোর পরিকল্পনার কথা বলছেন হাসপাতাল তত্ত্বাবাধয়ক।
জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. একেএম রাসেল জানান, মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালের আলাদা ডায়রিয়া ইউনিটে বিছানা রয়েছে ১০ টি। কিন্তু প্রতিদিন ডায়রিয়া রোগীর ভর্তি থাকছে ২৫ থেকে ৩০জন। এতে ডায়রিয়ার ইউনিট ছাপিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে সাধারন ওয়ার্ডের মেঝেতে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের পরিবেশও নোংরা হয়ে পড়ছে। একটি মাত্র টয়লেট ব্যবহার করতে হয় এতগুলো রোগীকে।
আরও পড়ুন: ডায়রিয়া ও কলেরার প্রকোপ: সচেতন থাকার পরামর্শ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
এদিকে ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করছেন, ডায়রিয়া ইউনিটে নোংরা ও অস্বাস্থ্য পরিবেশ। তাছাড়া পুরো ইউনিটে রয়েছে মাত্র একটি টয়লেট। তাও নোংরা, অপরিচ্ছন্ন। এতে করে রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এছাড়া প্রয়োজনীয় সকল ঔষধও মিলছে না। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে ঔষধ কিনতে হচ্ছে।
তবে ডায়রিয়া ইউনিটে কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকরা জানায়, তারা সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ডায়রিয়া রোগীদের জন্য খাবার স্যালাইন, প্যারাসিটামল ঔষধ পর্যাপ্ত রয়েছে। তবে কলেরা স্যালাইনসহ সিপ্রোসিন জাতের ঔষধের সাপ্লাই না থাকায় রোগীদের সেগুলো বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশাদ উল্লাহ জানালেন, গত শনিবার স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন কমিটির সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ৫০ শয্যার আলাদা ডায়রিয়া ওয়ার্ড স্থাপনের পরিকল্পনার কথা বলেছেন। আগামী অর্থবছরে সেটি স্থাপনের কাজ শুরু হবে। তবে এখন জায়গা স্বল্পতার কারণে অতিরিক্ত রোগীদের মেঝেতে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে রোগীর চাপ সামলাতে অন্য ওয়ার্ডে ডায়রিয়ার রোগী স্থানান্তর করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে দু’শোর ওপরে ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় শিশুরোগ ও ডায়রিয়া বেড়েছে