পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণের ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ যমুনার পানি বৃদ্ধিতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদীতেও পানি বাড়তে শুরু করেছে। আর এতে পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খাঁ নদীর নিম্নাঞ্চলের (চরাঞ্চলের) বিভিন্ন ফসলের খেত তলাতে শুরু করেছে। এছাড়াও ভাঙন দেখা দিয়েছে নদীতে।
গত এক সপ্তাহ যাবত ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এই নদীতে ছয় দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এরপরও প্রতিদিনই বাড়ছে পানি।
আকস্মিক বৃদ্ধির ফলে এই পানি চরাঞ্চলের বাদাম, তিল ও ধান খেতে প্রবেশ করছে। বাধ্য হয়ে কৃষকেরা অপরিপক্ব ফসল ঘরে তুলছে। পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে ইতোমধ্যেই তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের শতাধিক একর বিভিন্ন জমির ফসল। এর মধ্যে বেশিরভাগই বাদাম। এছাড়া তিল ও ধানও রয়েছে।
সরেজমিনে রবিবার দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলার পদ্মার নিম্নাঞ্চল ডিক্রিরচর ইউনিয়নের পালডাঙ্গি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বাদাম খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষকেরা অপরিপক্ব বাদাম তুলছেন। এছাড়া ধান ও তিলও তুলতে দেখা যায়। নদীর অপরপ্রান্তেও তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের খেত।
পালডাঙ্গি এলাকার কৃষক রমজান আলী ভূঁইয়া জানান, আট বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। ৪/৫ দিন পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে সব জমির বাদাম তলিয়ে গেছে। আর মাত্র ১৫ দিন থাকলে বাদাম পরিপক্ব হয়ে যেতো। কিন্তু এখন বাদাম তুলে ফেলতে হচ্ছে। এই বাদাম এখনও পরিপক্ব হয়নি। তুলে নিয়ে গরু, ছাগলকে খাওয়াবো। অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো।
আরেক কৃষকের স্ত্রী সুফিয়া বেগম বলেন, এক একর জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। আবাদ করতে খরচ হয়েছিল ৩০ হাজার টাকা। এই বাদাম বিক্রি করেই আমাদের সারা বছরের সংসার খরচ চলে, কিন্তু এ বছর সব শেষ হয়ে গেলো। গত কয়েকদিন যাবত পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অপরিপক্ব বাদাম তুলে ফেলতে হচ্ছে। এই বাদাম গরুকে খাওয়ানো ছাড়া আর কিছুই করা যাবে না।