বরিশালের নবগ্রাম রোডে হলি কেয়ার মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে চন্দন সরকার (২৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনরা দাবি করেছেন, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে হলি কেয়ার মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের চতুর্থ তলার মেঝ থেকে যুবকের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
মৃত চন্দন সরকার বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বড়পাইকা এলাকার চিত্তরঞ্জন সরকারের ছেলে।
লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শাহজালাল মল্লিক। তিনি জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত ওই যুবকের গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: বিএনপিও জানে জিয়ার লাশ চন্দ্রিমা উদ্যানে নেই: প্রধানমন্ত্রী
ওই যুবকের মামা নিবাস মহুরী বলেন, ‘ভোর রাতে হলি কেয়ার থেকে মোবাইলে আমাকে জানানো হয় চন্দন আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু আমি তা বিশ্বাস করি না। আমার ভাগ্নেকে টর্চার করে মেরে ফেলা হয়েছে। আত্মহত্যা করলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করবে। কিন্তু এখানে হলি কেয়ারের লোকজনই বাথরুম থেকে লাশ ফ্লোরে এনে রেখেছে। এটি হত্যাকান্ড, আমি এই হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
হলি কেয়ারের ব্যবস্থাপক মাইনুল হক তমাল দাবি করেন, হলি কেয়ার মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে মোট ২৮ জন রোগী ভর্তি ছিল। এরমধ্যে একজন দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এখন ২৭ জন রয়েছে। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। বিস্তারিত তারাই বলতে পারবেন।
হলি কেয়ারের চতুর্থ তলার দায়িত্বে থাকা ভলান্টিয়ার সরোয়ার বলেন, ‘রাত সোয়া তিনটার দিকে আমাকে ডেকে তোলা হয়, একজন টয়লেটে আত্মহত্যা করেছে বলে। উঠে দেখি চন্দন সরকার গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আমরা তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে মেঝেতে এনে রাখি।’
আরও পড়ুন: বুড়িগঙ্গা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
বাথরুমের উচ্চতায় কেউ আত্মহত্যা করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সরোয়ার বলেন, তা বলতে পারবো না, তবে লাশ সেখান থেকে উদ্ধার করেছি।
এদিকে ভর্তি অন্যান্য রোগীরা জানান, ভলান্টিয়ারের দায়িত্বে থাকা সরোয়ার কথায় কথায় রোগীকে মারধর করে। গতকাল রাত সাড়ে দশটার দিকে চন্দন সরকারকে মারধর করা হয়। শেষ রাতে জানানো হয়, তিনি মারা গেছেন।
অভিযুক্ত সরোয়ার এ বিষয়ে বলেন, ‘গতকাল রাতে চন্দন সরকার পশ্চিম দিকে পা দিয়ে শুলে আরেক রোগী তারিকুল তা নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চন্দন তারিকুলকে ঘুষি মারেন। এসময়ে চন্দনকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে কয়েকটি থাপ্পড় দিয়েছি। কিন্তু তাকে কোনও নির্যাতন করিনি।’