বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে স্বামী ও ছেলেকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলার প্রধান আসামি রিয়াজ শিকদারকে প্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলার কচুয়া উপজেলার বাগমারা খেওয়াঘাট থেকে র্যাব খুলনা-৬ এর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা বৃহস্পতিবার বাগেরহাট সদর হাসপাতালে সম্পূর্ণ হযেছে। ওই নারী বাগেরহাট মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ২২ ধারায় ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার রিয়াজ শিকদার (৩৮) বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বর্শিবাহ গ্রামের আব্দুল মজিদ শিকদারের ছেলে।
র্যাব খুলনা-৬ এর সদরের কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার আল-আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, গৃহবধূ ধর্ষণ এবং ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরা ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে র্যাব সদস্যরা ওই গৃহবধূ ধর্ষণ এবং ডাকাতির ঘটনার মুল হোতা রিয়াজ শিকদারের অবস্থান নিশ্চিত হয়। এর পর র্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে কচুয়া উপজেলার বাগমারা খেওয়াঘাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। র্যাব কার্যালয়ে রেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অপর আসামিদের ধরতে র্যাবের অভিযান চলছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: পথ হারিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী, আটক ৫
মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু বাগেরহাট মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ২২ ধারায় ওই রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। আদালতের বিচারক তার ওই বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন। এছাড়া ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে।
ওসি আরও জানান, গৃহবধূ গণধর্ষণ এবং ডাকাতির ঘটনায় আসামিদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। দ্রুত আসামিদের আটক করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদী।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ আদনান হোসেন জানান, হাসপাতালের তিন সদস্যের নারী চিকিসকদের মেডিকেল বোর্ড ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পূর্ণ করেছে। ওই মেডিকেল বোর্ড তার বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে এবং নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। পরীক্ষার রিপোর্ট বিশ্লেষণ শেষে তারা রিপোর্ট দেবে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গভীর রাতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে স্বামী ও ছেলেকে বেঁধে রেখে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে সংঘদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই গৃবধূর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানোর পর আসামিরা যাওয়ার সময় ঘরে থাকা স্বর্ণলংকার, দুই বস্তা শুকনা সুপারি, শাড়ি কাপড়, নগদ অর্থসহ কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর দিনমজুর স্বামী বুধবার মোড়েলগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে রিয়াজ শিকদারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও আট থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
আরও পড়ুন: বাসা থেকে ডেকে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ৪