সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর জানান, শহরের পুরান বগুড়ার বাসিন্দা দেবনাথ রাত ৩টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
তার আগে মারা যাওয়া তিনজন হলেন পুরান বগুড়া ঋষি পল্লীর প্রেমনাথ (৬০), শহরতলীর ফাঁপোড়ের রিকশাচালক জুলফিকার (৫২) ও নিশিন্দারা ধমকপাড়ার আলমগীর (৪০)।
আরও পড়ুন: থার্টি ফার্স্ট নাইট: অতিরিক্ত মদ পানে রাজশাহীতে ৩ জনের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে তাদের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে একজন হাসপাতাল ও অপর দুজন নিজ বাড়িতে মারা যান।
ওসি হুমায়ুন জানান, প্রেমনাথ হাসপাতালে মারা যান। তিনদিন আগে থেকে অসুস্থ থাকা আলমগীর মারা যান বাড়িতে। জুলফিকারের মৃত্যু বিষয়ে ওসি কিছু জানাতে পারেননি।
তার আগে, জেলায় বিষাক্ত মদ পান করে ছয়জন মারা যান। পুরান বগুড়া, ফুলবাড়ি ও কাটনারপাড়া এলাকায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ‘অতিরিক্ত মদ পানে’ ছোট ভাইয়ের মৃত্যু, বড় ভাই হাসপাতালে
মৃত ব্যক্তিরা হলেন পুরান বগুড়ার লোকমানের ছেলে রাজমিস্ত্রি রমজান আলী (৪০) ও প্রেমনাথের ছেলে সুমন (৩৮), কাটনারপাড়ার টোকাপট্টির কুলি শ্রমিক সাজু (৫৫) ও বাবুর্চি মোজাহার আলী (৭০) এবং ফুলবাড়ির সরকারপাড়া এলাকার আব্দুল জলিল (৬৫) ও মধ্যপাড়ার পলাশ (৩৫)।
স্থানীয়রা জানান, শহরের তিন মাথা এলাকায় ঋষি পরিবারের ছেলে চঞ্চলের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল রবিবার রাতে। সে উপলক্ষে অনুষ্ঠানে আগত লোকজন পার্শ্ববর্তী শাহীনের হোমিও দোকানে মদ্যপান (রেকটিফাইড স্পিরিট- আরএস) করেন। পরে বাড়ি ফিরে সুমন, তার বাবা প্রেমনাথ ও চাচা রামনাথ এবং প্রতিবেশী রমজান অসুস্থ হয়ে পড়েন। সোমবার ভোরে তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন। আর রমজান স্থানীয় একটি ক্লিনিকে মারা যান।
আরও পড়ুন: বিরামপুরে চোলাই মদ পানে ৪ জনের মৃত্যু
এছাড়া, শহরের কালিতলা এলাকায় রবিবার রাতে অ্যালকাহোল জাতীয় মদ পান করেন সাজু, মোজাহার ও জলিল। পরে তিনজনই অসুস্থ হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে মারা যান।
বগুড়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তরুণ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘তিনজনই কালিতলা মন্দিরের পেছনে অতিরিক্ত অ্যালকাহোল পান করে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে মারা যান।’
ওসি হুমাযুন বলেন, ‘মৃত প্রত্যেকের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের পরিবার থেকে বিষাক্ত মদ্যপানে মারা যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিশ এ ব্যাপারে তদন্ত করছে।’
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ‘মদ পানে’ রুশ নাগরিকের মৃত্যু
এদিকে, পলাশ সোমবার বেলা ৩টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তিনি শহরের ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ার আব্দুল জলিলের ছেলে।
এ ঘটনায় পলাশের ছোট ভাই পায়েল (৩০) ও একই এলাকার রঞ্জু (৩৪) অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, তারা রবিবার রাতে ফুলবাড়ির কলেজ বটতলা এলাকায় মদ পান করে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু রাতেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়লেও হাসপাতাল না গিয়ে বাড়িতে ছিলেন। সোমবার দুপুরে পুলিশ তাদের তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ৩টার দিকে পলাশ মারা যান।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে অতিরিক্ত মদ্যপানে ছাত্রলীগ নেতাসহ মৃত ৩
ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফুলবাড়ি এলাকায় পলাশ নামে একজন মারা গেছেন এবং অসুস্থ আরও দুজনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তারা কী কারণে অসুস্থ হয়েছেন তা জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’