জেলায় বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত দশ বছরের একদিনের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) মোখলেছুর রহমান।
ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালি ও ভোগাই নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানির তোড়ে ভোগাই নদীর শিমুলতলী বাঁধ ভেঙ্গে পৌরশহরে মধ্যবাজার, জেলখানা রোড, উত্তর গড়কান্দা, নালিতাবাড়ী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় অনেক বাড়িঘরেও পানি প্রবেশ করেছে। এতে ওইসব এলাকার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হন। সকালে চেল্লাখালি নদীর পানি গাজীরখামার-নালিতাবাড়ী সড়কের বালুঘাটা এলাকায় সড়ক উপচিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানিতে ডুবল ঢাকার রাস্তা, ভোগান্তিতে মানুষ
ওই দুই নদীর পানি পরিমাপকরা (গেজ রিডার) জানিয়েছেন, দুপুর ১২টায় নালিতাবাড়ী পয়েন্টে চেল্লাখালি নদী বিপদসীমার ১ দশমিক ৭৩ মিটার ওপর দিয়ে ২৭ দশমিক ৪৭ মিটার উচ্চতায় এবং ভোগাই নদী ৬২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ১৭ দশমিক ৯৯ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল।
চেল্লাখালির পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আলমগীর হোসেন জানান, এমন ভারি বর্ষণ গত কয়েক বছরেও দেখিনি। বর্ষণ অব্যাহত আছে, উজানেও বৃষ্টি হচ্ছে। তাতে করে পাহাড়ি নদ-নদীগুলোর পানি আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে দু’কোল উপচিয়ে ঝিনাইগাতী-রাংটিয়া সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দিঘিরপাড় এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ঝিনাইগাতী উপজেলা কমপ্লেক্সে ও ঝিনাইগাতী বাজারে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করে। এতে নিম্নাঞ্চলের কমপক্ষে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অর্ধশতাধিক পুকুরের মাছ, ডুবে ড়েছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। ফলে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েন।
ঝিনাইগাতী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, ঝিনাইগাতী সদর বাজারের মসজিদ রোডসহ বাজারের একাংশ হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকা
হাতিবান্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আলী আকবর বলেন, আমার ইউনিয়নের কমপক্ষে পাঁচটি গ্রামে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে। এতে আমন ধানের বীজতলা, সবজি ও বেশ কিছু পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল-মাসুদ সাংবাদিকদের জানান, সকালে ভাঙ্গা বাঁধ ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বৃষ্টি কমলে পানি দ্রুতই নেমে যাবে। প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে দ্রত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।