ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী অভয়াশ্রমে র্দীঘ দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নদীতে নেমেছেন জেলেরা।
কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষে হওয়ার পর গত ২ দিন নদীতে জেলেরা কাঙিক্ষত মাছ পাচ্ছে না। ফলে প্রায় খালি হাতেই ফিরছেন তারা।
তবে জেলেদের আশা আগামী পূর্ণিমার পর হয়তো তাদের জালে ধরা পড়বে প্রত্যাশিত পরিমাণের ইলিশ।
আরও পড়ুন: রামগতিতে ৪ হাজার কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, আটক ৯
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশের অভয়াশ্রম হওয়ায় দুই মাসের জন্য ভোলার ইলিশা থেকে চর পিয়াল ৯০ কিলোমিটার মেঘনা নদী ও ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম ১০০ কিলোমিটার তেতুঁলিয়া নদীতে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য বিভাগ।
নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ৩০ এপ্রিল রবিবার মধ্যরাত থেকে উৎসব মুখর পরিবেশে নদীতে নেমেছেন ভোলার সাত উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ জেলে। তাদের আশা ছিল দুই মাসের অভিযান শেষে নদীতে প্রচুর মাছ পাবেন।
আর তাতে গত দুই মাসের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন। ফিরে পাবেন স্বচ্ছলতা। কিন্তু জালে আশানুরূপ মাছ ধরা পড়ছেনা।
ভোলার তুলাতুলি মাছ ঘাটের জেলেরা জানান, নদীতে সারাদিন জাল ফেলে দুই-চারটি যা মাছ ধরা পড়েছে তা আকারে ছোট। কোনো কোনো জেলে সামান্য মাছ পেলেও তা বিক্রি করে তেল খরচও উঠছেনা।
এতে তারা হতাশায় পড়েছেন। তবে মাছ কম পড়ায় দাম বেশ চড়া।
অন্যদিকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময় তাদের ব্যবসা বন্ধ থাকায় লোকসান গুণতে হয়েছে। এবার নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে গিয়ে প্রচুর পরিমাণ মাছ শিকার করলে জমজমাট হবে তাদের ব্যবসা।
এ ছাড়াও বিগত দুই মাসের লোকসান পুষিয়ে নিবেন তারা। কিন্তু মাছ কম পাওয়ায় তারা হতাশ।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরের জেলেরা ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে
ইলিশা মাছ ঘাটের মৎস্য ব্যাপারী শাহাবুদ্দিন জানান, মঙ্গলবার মাছের পরিমাণ আরও কমে গেছে। এতে তারা বিপাকে রয়েছে। সামান্য মাছ পাওয়া গেলেও তার দাম অনেক বেশি।
এদিকে এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা ও মাঝারি সাইজের সাত থেকে আট হাজার টাকা দরে।
মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত দুই মাসে ভোলার সাত উপজেলায় ৪০৩টি অভিযান পরিচালনা করে ৩৬২জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। ৪৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২০৩ জন জেলেকে ছয় লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আটককৃত বাকিরা অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়ায় তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন জানান, তাদের দুই মাসের অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া ইলিশ মাছ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে।
তিনি আশা করছেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গিয়ে জেলেরা প্রচুর মাছ শিকার করে দুই মাসের লোকসান পুষিয়ে আবার ঘুড়ে দাঁড়াবেন।
আরও পড়ুন: ইলিশ ধরার ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রবিবার মধ্যরাতে