শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মা ও মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সুলতান মাহমুদ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ দিন জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফারিন ফারজানা ধর্ষণের শিকার কিশোরীর (১৬) জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। পরে বয়স নির্ধারণী পরীক্ষার জন্য তাকে জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আদালত পরিদর্শক খন্দকার শহীদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারাগারে পাঠানো দুই আসামি হলেন- নালিতাবাড়ী উপজেলার পলাশীকুড়া গ্রামের আব্দুল বাছেদ আলীর ছেলে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে মেম্বার পদপ্রার্থী আব্দুস সাত্তার (৪২) এবং আব্দুস সোবহানের ছেলে সাদেক আলী (৩০)।
এদিকে সোমবার শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার মা ও মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. খাইরুল কবীর সুমন তাদের মেডিকেল পরীক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নারী চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড নালিতাবাড়ীর ধর্ষণ মামলার ভুক্তভোগী মা ও মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন।
আরও পড়ুন: শেরপুরে মা-মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়,কয়েকদিন আগে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ তার কিশোরী কন্যাকে (১৬) নিয়ে নালিতাবাড়ীতে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। বেড়ানো শেষে শনিবার বেলা ১১টার দিকে ইজিবাইকে করে শেরপুর যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। কিন্তু স্থানীয় এক দালাল ও ওই গৃহবধূর পাড়া-প্রতিবেশী ভাই তাদের সাথে নিয়ে সারাদিন নালিতাবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা করার পর রাতে পলাশীকুড় গ্রামে নিয়ে যায়। পরে তাদের কৌশলে একটি নির্মাণাধীন জনশুন্য বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় সাত ব্যক্তি মিলে মা এবং মেয়েকে বাড়ির পৃথকস্থানে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। রবিবার সকালে ভুক্তভোগী মা-মেয়ে বাড়ি ফিরে ঘটনা প্রকাশ করলে স্বজনরা ৯৯৯ কল করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় জড়িত সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদলের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে আব্দুস সাত্তার ও সাদেক আলী গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, রবিবার সকালে ৯৯৯ থেকে ম্যাসেজ আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অভিযান চালিয়ে জড়িত দুই জনকে আটক করি। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর করা মামলায় ওই দুই জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হলে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন: নাটোরে প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ