যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে ভারতফেরত ১০ জন করোনা রোগী পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার সকাল থেকে রবিবার দুপুরের মধ্যে তারা হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে।
আরও পড়ুন: জুনের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না: বিশেষজ্ঞ মতামত
হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের অবহেলার কারণে তারা পালিয়ে যেতে পেরেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এতে করে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দাবি করে বলছেন, মাত্র দুইজন রোগী পালিয়েছেন।
আর সিভিল সার্জন বলছেন, হাসপাতাল থেকে পালানো রোগীদের দেয়া নাম ঠিকানা যদি ঠিক থাকে তবে অবশ্যই তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ব্রাদার তারক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত শনিবার সকাল ১০টা ৫৭ মিনিটের দিকে ভারতফেরত কিছু রোগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর রবিবারও রোগী আসেন। সব মিলিয়ে ২ দিনে ১০ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের সবাইকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্ট্রার মতে, ভর্তি রোগীরা হলো যশোর শহরের খালধার রোডের বিশ্বনাথের স্ত্রী মালা দত্ত (৫০), শহরের বিমান অফিস মোড়ের আবুল কাসেমের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৭), সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম(১৯), একই গ্রামের একরামের স্ত্রী রোমা (৩০), প্রতাপকাঠি গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে মমিন, রামকান্তপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০), বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫), ঝিনাইদাহ জেলার কালীগঞ্জের মনোতষের স্ত্রী শেফালী রানী, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রামরাইল গ্রামের আহম্মদ সানার ছেলে আমিরুল সানা ও একই জেলার রুপসা এলাকার শের আলীর ছেলে সোহেল (১৭)।
আরও পড়ুন: করোনার ১ম ডোজের টিকাদান সোমবার থেকে স্থগিত
করোনা ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিনিয়র নার্স লাবনী বিশ্বাস বলেন, ভারত থেকে করোনাভাইরাসে আক্রন্ত হয়ে আসা ১০ জন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। কিন্তু রবিবার সকালের পর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক বলছেন, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে পালিয়ে যাওয়া রোগীরা যদি ভারতীয় ভেরিয়েন্টের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়াও ভাইরোলজিস্টরা বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যদি কোনো পরিবারে থাকে তাহলে তার মাধ্যমে প্রথমে তার পরিবার ও আশপাশের লোকজনও আক্রান্ত হতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, ভারত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগী হাসপাতালে আনা হলে তা পুলিশ স্কট করে দিয়ে যাবে। একইসাথে তাদের পাসপোর্ট পুলিশ হাসপাতালে জমা করবে। কিন্তু তার কোনোটাই করা হয়নি। কোনো রোগী যাতে পালাতে না পারে সে জন্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার বিষয়ে আমি পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলবো।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, রোগী পালানোর কথা শুনে আমি রবিবার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলাম। যে ১০ জন রোগী পালিয়েছে তাদের নাম ঠিকানা সঠিক থাকলে তাদেরকে খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
যশোর কোতয়ালী থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখা হবে।