সারাদেশে পঞ্চম ও ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুধু জানুয়ারি মাসে ১০৯টি সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গণমাধ্যম থেকে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট সহিংসতার ১০৯টি রিপোর্টের ওপর সংগৃহীত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলো থেকে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।
এমএসএফের মতে, এ বছর উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সহিংসতা আগের সব বারের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
এমএসএফ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে একজন প্রতিপক্ষের গুলিতে এবং অন্য চারজনকে আইন প্রয়োগকারী বাহিনী গুলি করেছে।
বগুড়া জেলায় সর্বোচ্চ সাতজন, ঝিনাইদহে পাঁচজন, চাঁদপুরে তিনজন ও নরসিংদীতে দুজন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: ষষ্ঠ ধাপে ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে
সম্প্রতি ৫ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি কেন্দ্রে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভোটকেন্দ্র ভাঙচুর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালালে পুলিশ ২৫টি গুলি ছুঁড়ে।
এমএসএফের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সংঘর্ষের সময় নারীসহ চারজন মারা যান এবং আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন।
একই দিন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার একটি ভোট কেন্দ্রে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৫০ বছর বয়সী সুমেলা খাতুন মারা যান।
গত ১২ জানুয়ারি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যের নির্যাতনে ৩০ বছর বয়সী আনোয়ারুল ইসলাম নিহত হন।
এমএসএফ-এর মতে, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী সহিংসতায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯২ জন এবং আহতের সংখ্যা চার হাজারের বেশি। দুর্বল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, পদ ও মনোনয়ন সংক্রান্ত দুর্নীতি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অপব্যবহার করেছে এবং স্থানীয় নির্বাচনে এ ধরনের সহিংসতাকে বৃদ্ধি করেছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রাণহানি কমাতে এবং এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ক্ষমতাসীন দল, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে রায়পুরায় নিহত ২, আহত ২০
ইউপি নির্বাচন: বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় সাতকানিয়ায় ১৮ জনকে আ’লীগ থেকে বহিষ্কার