ঘটনার ৪৫ দিন পর আটক দুই যুবক শনিবার আশরাফুলকে অপহরণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
নিহত আশরাফুল ইসলাম স্থানীয় কাফাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ও ধল্লা-কাফাটিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ আলীর একমাত্র ছেলে।
এ ঘটনায় মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে দুই আসামি আশরাফুলকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার যুবকরা হলেন- সদর উপজেলার কাফাটিয়া গ্রামে মনোয়ার হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম হোসেন (২৪) ও সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা গ্রামের আবুল হাশেমের ছেলে আরিফ হোসেনকে (২৩)-
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) হানিফ সরকার জানান, গত ৬ আগস্ট বিকালে স্কুলছাত্র আশরাফুল ইসলাম মোটরসাইকেল নিয়ে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় পরের দিন আশরাফুলের দাদা নাজিম উদ্দিন মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেন। পরে জিডিটি মামলা আকারে রেকর্ড করা হয়।
ওসি বলেন, ২৫ আগস্ট আশরাফুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় সিংগাইর আজিজমপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই মোবাইলের সূত্রে ধরে ১৯ সেপ্টেম্বর ভোরে ইব্রাহিম হোসেন ও আরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিখোঁজ আশরাফুলের লাশ উদ্ধারের জন্য সিঙ্গাইর উপজেলার উত্তর জামশা এলাকায় কালিগঙ্গা নদীতে ডুবুরি দিয়ে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু লাশের সন্ধান মিলেনি।
গ্রেপ্তার যুবক, পুলিশ ও আদালতকে জানায়, ঘটনার দিন গত ৬ আগস্ট স্কুলছাত্র আশরাফুলকে তার ব্যবহৃত সুজুকি মোটরসাইকেল নিয়ে আসামি ইব্রাহিম হোসেন সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা যায়। সেখানে আশরাফুলসহ চার আসামি উত্তর জামশা গ্রামে আলমের বাড়িতে মাদক সেবন করে। এরপর রাতে ইউনুস আশরাফুলকে বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায়। আসামিরা আশরাফুলকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে তার লাশ পার্শ্ববর্তী কালিগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়। ওই রাতেই আশরাফুলের মোবাইলের ইমো অ্যাপস ব্যবহার করে আসামিরা তার প্রবাসী বাবা মোহাম্মদ আলীর কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ও টাকা পাঠানোর জন্য কয়েকটি বিকাশের নম্বর দেয়।
ঘটনার কয়েকদিন পর আশরাফুলের সুজকি মোটরসাইলটি রাজবাড়ি জেলার সাজ্জাদ হোসেনের কাছে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করে ওই টাকা আসামিরা ভাগ করে নেয়। আশরাফুলের ওই মোটরসাইকেলটি শুক্রবার সিলেট থেকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, চারজন আসামির মধ্যে একজন সম্প্রতি বিদেশে চলে গেছেন। অন্যজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।