বর্তমানে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা খুবই বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যাত্রী, চালক, পথচারী থেকে শুরু করে কেউই নিয়ম মানে না।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা খুবই বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে। যারা চলাচল করে তারা নিয়ম মানে না। হকাররা ফুটপাত দখল করে বসে আছে। আবার ফুটপাতে মোটরসাইকেলও উঠাচ্ছেন চালকরা। এই অবস্থায় ট্রাফিক ব্যবস্থা খুবই জটিল হয়ে পড়েছে।
যোগদানের পরপরই তিনি এসব বিষয়ে নজর দিয়েছেন বলে জানান। একই সঙ্গে ট্রাফিকের এই অব্যবস্থাপনা দূর করতে হলে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মামলা নিতে না চাইলে ওসিদের এক মিনিটে বরখাস্ত করা হবে: ডিএমপি কমিশনার
শেখ সাজ্জাত বলেন, ‘ঢাকায় প্রায় দুই কোটি মানুষ। এত ঘনবসতি দুয়েকটা দেশে থাকতে পারে। ৫ আগস্টের পরে যখন পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। সবার সহযোগিতায় আমরা সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠেছি।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'ঢাকায় আমাদের রাস্তা থাকা উচিত ২৫ ভাগ, আছে ৭ ভাগ। বিগত সরকারের আমলে অটোরিকশার অনুমোদন দেওয়া হয়। এগুলো চলতে থাকলে ঢাকা শহরে চলার মতো অবস্থা থাকবে না। আমাদের রাস্তার জায়গা অত্যন্ত সীমিত। তাই এটা বন্ধ করতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত দেড় লাখ অটোরিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’
যানজট কমাতে কর্মস্থলের আশেপাশে বাসা নেওয়ার পরামর্শ দেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘আপনার বাচ্চার স্কুল ও কর্মক্ষেত্রের কাছে বাসা নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাহলে গাড়ি ব্যবহার অনেকটা কমে যাবে। সবার সহযোগিতা লাগবে। বাচ্চাসহ তিন-চারজন বা পুরো পরিবারকে একটা মোটরসাইকেলে চলতে দেখা যায়। যেটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, এরকম দেখলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ট্রাফিক ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতির কথাও তুলে ধরেন তিনি। শেখ সাজ্জাত বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য আছে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ভোরের দিকে। আমি বলেছি এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি একটি অভিযোগ বাক্স রাখব। এছাড়া উন্মুক্ত আলোচনা করে সবার পরামর্শ নেব।'
তিনি বলেন, 'আমি ট্রাফিকের প্রতি বেশি জোর দিচ্ছি কারণ, এটা সবচেয়ে ভোগান্তির জায়গা। উত্তরা থেকে মতিঝিল থেকে আসতে তিন ঘণ্টা লাগে। এই অবস্থা দেখলে বিদেশিরা কেন বিনিয়োগ করবে?’
সাজ্জাত আরও বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে ডিএমপি পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে যে কাজগুলো করেছে, তার জন্য আমি ঢাকাবাসীর কাছে এবং দেশবাসীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। তাদের বিভিন্ন জায়গায় বদলি করে দেওয়া হয়েছে এবং শাস্তির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আমরা নতুন করে দেশবাসীর সেবার জন্য কাজ শুরু করেছি।'