কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে এক প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার(১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে মারধরের এ ঘটনা ঘটে।
এছাড়া শনিবার বিকালে এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকনসহ আরও ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মারধরের শিকার প্রধান শিক্ষক মো. নুরুন্নবী (৪১)।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
রোকনুজ্জামান রোকন রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করছেন রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপ কুমার সরকার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকালে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এই ঘটনা ঘটেছে। পিটানোর এই দৃশ্য ধরা পড়ে সিসি টিভি ক্যামেরায়।
পরে উপস্থিত লোকজন আহতাবস্থায় ওই প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করেন।
ওইদিন রাত ৮টার দিকে নুরুন্নবী বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামানসহ দুই জনের নাম উল্লেখ করে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযাগ করেন।
এ ঘটনায় শিক্ষক সমাজসহ উপজেলায় জুড়ে বইছে সমালাচানার ঝড়।
নির্যাতিত নুরুন্নবী উপজেলার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অন্যদিক রোকনুজ্জামান সদ্য ঘোষিত আংশিক কমিটির উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক।
নির্যাতিত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী অভিযোগ করে বলেন, তার সঙ্গে বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান ও আসাদুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিল।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রশিদসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস যান তিনি। কাজ শেষে অফিসের দোতলা থেকে নেমে উপজেলা চত্বরে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান ও তার সঙ্গীয় লোকজন জোরপূর্বক তাকে (প্রধান শিক্ষক) তুলে নিয়ে প্রথম পলি বাস কাউন্টারে আটকে রেখে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
পরে প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা তাকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে নিয়ে যান।
কথাবার্তার এক পর্যায়ে রোকনুজ্জামান প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবীকে চড়-থাপ্পর শুরু করলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ার থেকে উঠে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে থামান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান কথা বলার এক পর্যায়ে হঠাৎ প্রধান শিক্ষককে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি দেন। এটা মোটেও ঠিক করেননি রোকনুজ্জামান। বড় মাপের অন্যায় করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে অটোরিকশা কিনতে বেরিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন চালক