ঘূর্ণিঝড় রিমালের সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।
গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পেয়েছেন তিনি।
বুধবার (১২ জুন) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত 'দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি বিষয়ে বিএসআরএফ সংলাপ'-এ তিনি কথা জানান।
বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
আরও পড়ুন: মেরামতের অপেক্ষায় ‘রিমালে’ ক্ষতিগ্রস্ত ভোলার ১১২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সার্বিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে গতকাল একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে। এই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছি ঘূর্ণিঝড়ের সব ক্ষতি হিসাব করে প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেব। আমি আজকের মধ্যে সারাদেশের সমস্ত মন্ত্রণালয়ের যে ক্ষতিটা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ রেডি করে আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেব।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রায় ৯০ ভাগ হিসাব পেয়ে গেছি। আজকে বাকিটা পেয়ে যাব। ক্ষয়ক্ষতির হিসাবটা আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেব, যাতে তিনি এটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেন। যাতে সব কাজগুলো প্রধানমন্ত্রী সঠিকভাবে করতে পারেন।
৯০ শতাংশ ক্ষতি টাকার অংকে কত- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত আমি দেখলাম যে আমার কাছে ৭ হাজার কোটি টাকার হিসাব আমার কাছে এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বেড়িবাঁধের। উপকূলীয় মৎস্য সম্পদেরও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। কোটি কোটি টাকার মাছের ঘেরগুলো নষ্ট হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে অসংখ্য বেড়িবাঁধ নষ্ট হয়েছে, রাস্তাঘাট নষ্ট হয়েছে, বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে।
ঢাকায় সর্বাচ্চ আট মাত্রার ভূমিকম্পও হতে পারে বলেও এসময় আশঙ্কা প্রকাশ করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তবে ভয়ের কারণ নেই। কারণ এমন পরিস্থিতি বহুদেশে আসছে। যেমন, তুরস্কে ভূমিকম্প হয়। কিন্তু তারা দুর্যোগ সহনীয় অবকাঠামো ও সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। যে কারণে সমস্যা এলে তা সমাধান করার সক্ষমতা তারা তৈরি করেছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো রকম ভূমিকম্প হয়, সেজন্য শহুরে অঞ্চলে ব্যাপকভাবে স্বেচ্ছাসেবী তৈরি করতে কাজ করছি। ভবনগুলো যদি ধসে যায়, তাহলে সেগুলো পরিষ্কার করা ও মানুষকে উদ্ধারে আমরা ব্যাপকভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
তিনি জানান, ভবিষ্যতে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ রেখে যেতে চাইলে জাতিকে দুর্যোগের বিষয়ে সচেতন করতে হবে। বিশেষ করে আমার ভয়ের কারণ ভূমিকম্প। বাংলাদেশ ভূমিকম্প প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। যেকোনো সময় আট মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। এতে ঢাকা শহরের লাখ লাখ লোক আটকা পড়তে পারেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নির্দিষ্ট গবেষণার ভিত্তিতেই আমি এমন কথা (৮ মাত্রার ভূমিকম্প) বলেছি। এ নিয়ে আমাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমালে ২০ জেলায় ৬৮৮০ কোটি টাকার ক্ষতি: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী