চট্টগ্রামের মানুষজন না চাইলে সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল হবে না বলে জানিয়েচেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। সোমবার দুপুরে রাজধানীর রেল ভবনে নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রাম’র নেতাদের সাথে মতবিনিময়কালে এ ঘোষণা দেন তিনি।
রেল্পথমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে হাসপাতাল করতে হলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ থেকে নকশা অনুমোদন করতে হবে। সিডিএ যদি নকশা না দেয় সেখানে হাসপাতাল হবে কী করে? আর অন্যান্য সংস্থার অনুমোদনে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেখানে কোনো কিছু করা সম্ভব না। সবচেয়ে বড় কথা চট্টগ্রামবাসী না চাইলেও সেখানে হাসপাতাল প্রকল্প হবে না।’
নুরুল ইসলাম বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল প্রকল্প রেল মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেনি। এটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পিপিপি অথরিটির প্রকল্প। বিনিয়োগও বেসরকারি। সুতরাং রেল মন্ত্রণালয়ের এখানে করার কিছু নেই। নাগরিক সমাজের দেয়া যাবতীয় তথ্য উপাত্ত আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবো। তিনিই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে আমার অভিমত হচ্ছে, আইন ও চট্টগ্রামবাসীর সেন্টিমেন্টের বাইরে যাওয়া ঠিক হবে না। আমরা যা কিছু করছি জনগণের কল্যাণে। জনগণের কল্যাণে সরকার প্রকল্প গ্রহণ করে।
রেলপথমন্ত্রী বলেন,এই প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের। জলবায়ু সম্মেলন শেষে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মতবিনিময়কালে মন্ত্রীর কাছে প্রকল্পের যাবতীয় অসঙ্গতি তুলে ধরে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম’র সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল।
এ সময় তিনি মন্ত্রীকে বলেন, সিআরবি হচ্ছে ২০০৯ সালের গেজেট অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি অনুমোদিত সরকার ঘোষিত হেরিটেজ জোন। এখানে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা হতে পারে না। আইনত তা নিষিদ্ধ। তাছাড়া এটি চট্টগ্রামের ফুসফুস এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু।
ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল আরও বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) জিএস শহীদ আবদুর রব, শহীদ মনোয়ার, শহীদ শেখ নজিরসহ ৯ শহীদের কবর এই সিআরবিতে। এখানে কোনো স্থাপনা হলে শহীদের কবর ধ্বংস হবে।
তিনি বলেন, আমরা হাসপাতালের বিপক্ষে নই। হাসপাতাল চাই। তবে সিআরবিতে নয়। সিআরবি ছাড়া অন্যত্র হাসপাতাল হলে আমরা স্বাগত জানাবো।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রাম’র কো-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুস, আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, জাসদ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহজাজান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিন, নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রাম’র যুগ্ম সদস্য সচিব ও বিএফইউজে’র যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরামের মহাসচিব শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান, প্রণব চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রাশেদুল ইসলাম ও অনির্বাণ দত্ত । এছাড়া অ্যাডভোকেট মাসুদুল আলম চৌধুরী, ব্যারিস্টার হেলাল উদ্দিন ও ব্যারিস্টার হারুন অর রশীদও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিআরবিতে কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না: চসিক মেয়র
চট্টগ্রামে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা
সিআরবির পরিবেশ ক্ষতি করে হাসপাতাল নির্মাণের চেষ্টা: ৮ সংস্থাকে আইনি নোটিশ