চট্টগ্রাম বিএনপির সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে তারুণ্যের সমাবেশে আসার পথে ছাত্রলীগ-যুবদলের সংঘর্ষের জেরে জামালখান এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা করা হয়েছে।
নগরীর চকবাজার থানা ও কোতোয়ালি থানায় বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ ও এক ছাত্রলীগ কর্মী বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। দুই মামলায় মোট ৫৩৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, নগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ ৭৮ জনের নাম উল্লেখ করে ১২০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরানুস সাজ্জাদ বাদি হয়ে এ মামলা করেন।
অপরদিকে, ছাত্রলীগ-যুবদলের সংঘর্ষের ঘটনায় চকবাজার থানায় মামলা করেন স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী সাফায়েত হোসেন রাজু। এতে নগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশাসহ ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, গতকাল বুধবার জামালখান মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনায় ৭৮ জনের নাম উল্লেখ করে ১২০ থেকে ১৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪, সেকশন ১৫ (৩) এবং পেনাল কোড ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৪২৭/৫০৬ এবং ১৮৬০ ধারায় মামলা করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জনকে ঘটনার পর জামালখান মোড় এবং রাতে সাবেক ছাত্রদল নেতা জাসেদুরকে আটক করা হয়েছিল। বাকিদের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর, ৫ যুবদল-ছাত্রদল নেতাকর্মী আটক
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, কলেজ রোডে নাশকতার ঘটনায় ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ছাত্রলীগের এক কর্মী। তার নাম সাফায়েত হোসেন রাজু। তিনি ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয়ের পাশাপাশি সরকারি কমার্স কলেজে অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিএমপি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিন জানান, দুই মামলায় বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আটক করা হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার বিকালে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল চট্টগ্রাম বিভাগের উদ্যোগে নগরীর কাজীর দেউড়ি চত্বরে ‘দেশ বাঁচাতে তরুণ্যে সমাবেশের’- আয়োজন করে।
বিকাল ৩টার দিকে চান্দগাঁও থেকে সমাবেশে আসা সময় চট্টগ্রাম কলেজের সামনে ছাত্রলীগের কর্মীরা যুবদল ও ছাত্রদলের বাসে হামলা চালায়। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে পাথর নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। পরে যুবদল-ছাত্রদল সমর্থকরা মিছিল নিয়ে কাজীর দেউড়ি যাওয়ার পথে জামালখান এলাকায় সৌন্দর্য বর্ধনে নির্মিত ডা.খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেওয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্থিরচিত্র সম্বলিত ট্যাম্পার্ড, গ্লাস ও ম্যুরাল ভাঙচুর করে।