গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
ফলে বিচারিক আদালতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলাটি চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ, দানকর দিতে হবে ১২ কোটি টাকা
আদালতে ড. ইউনূসের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।
জানা যায়, শ্রম আইন লঙ্ঘনের এ মামলায় গত ৬ জুন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক।
অপর তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
পরে অভিযোগ গঠনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূসসহ চারজন। এর শুনানি নিয়ে গত ২৩ জুলাই বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রুল দেন। রুলে তাদের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে মামলার বাদীসহ প্রতিপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ গত ৩ আগস্ট এ মামলায় জারি করা রুল দুই সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন।
বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে এই রুল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়। সে অনুযায়ী সোমবার রুলের ওপর হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। মঙ্গলবার শুনানি গ্রহণ শেষে হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ করে দেন।
২০২১ সালের ১৬ আগস্ট কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রাজধানীর মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের কার্যালয় পরিদর্শন করে শ্রম আইনের লঙ্ঘন দেখতে পান।
একই বছরের ১৯ আগস্ট অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে গ্রামীণ টেলিকমকে চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে, ৬৭ জন কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করার কথা থাকলেও গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ তা করেনি।
এছাড়া কর্মচারী অংশীদারিত্ব ও কল্যাণ তহবিল গঠন এবং কোম্পানির ৫ শতাংশ লভ্যাংশ কর্মচারীদের পরিশোধ করা হয়নি।
পরে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এসএম আরিফুজ্জামান মামলা দায়ের করেন।
এরপর গত ৬ জুন ঢাকার শ্রম আদলত-৩ এর বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।
অন্য আসামিরা হলেন-গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান এবং পরিচালক নূর জাহান বেগম ও মোহাম্মদ শাহজাহান। পরে অভিযোগ গঠন আদেশ বাতিল চেয়ে ড. ইউনূসের পক্ষে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন প্রশ্নে রুল ২ সপ্তাহে নিষ্পত্তির নির্দেশ