সিরাজগঞ্জের তাড়াশে গৃহবধূকে গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার অভিযোগে দুই জনকে আটক করা হয়েছে। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার চক ঝুরঝুরি গ্রামে এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী পলাতক আছে।
নিহত নাসিমা খাতুনের (২৩) ওই এলাকার সুমনের স্ত্রী এবং তাড়াশ উপজেলার কস্তা বেত্রাশীন গ্রামের কহের সরকারের মেয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, নাসিমার সঙ্গে সুমনের সাত-আট বছর আগে বিয়ে হয়। এরমধ্যে তাদের সংসারে দুটি সন্তানের জন্ম হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, স্বামী আটক
বেশ কিছুদিন ধরে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে নাসিমার পারিবারিক দ্বন্দ শুরু হয়। এ অবস্থায় সুমন কিছুদিন আগে নাসিমাকে চাকরির জন্য ঢাকায় নিয়ে যায়। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে তারা ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে আসে এবং দিবাগত রাত ৩টার দিকে নাসিমাকে সুমন ও তার তিন সহযোগী বাড়ির পাশের একটি পুকুরপাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রথমে জোর করে গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ায় এবং পরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
এ সময় প্রতিবেশি সমেজ আলী শব্দ পেয়ে বাড়ির লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে সুমন ও তার সহযোগীরা নাসিমাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
পরে গ্রামের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে গেলেও তার শ্বশুর-শাশুড়ি গেট খোলেনি।
এ সময় নাসিমা গ্রামবাসীর কাছে তার স্বামী সুমন ও অপরিচিত তিনজন লোক তাকে খুন করার চেষ্টা করেছে বলে জানায়। এর কিছুক্ষণ পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
নাসিমার এমন করুণ মৃত্যুর পর গ্রামবাসী শ্বশুর-শাশুড়িকে অবরুদ্ধ করে রেখে পুলিশে খবর দেয়।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) গভির রাতে শ্বশুর সরোয়ার হোসেন (৫৫) এবং শাশুড়ি ফিরোজা বেগমকে (৫০) পুলিশ আটক করলেও স্বামী সুমন পালিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
আরও পড়ুন: যশোরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা, যুবক আটক