শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মানুষ ও বন্যহাতির দ্বন্দ্ব নিরসনে এক সচেতনতামূলক কর্মশালা করেছে বনবিভাগ। শনিবার বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের মধুটিলা ইকোপার্কে ময়মনসিংহ বন বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় বন্যহাতি হত্যা না করতে এবং জনগনকে সচেতন করার লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়।

সেইসাথে গহীন অরণ্যে যেখানে হাতির আবাসস্থল, সেখানে বনবিভাগের জায়গা দখল করে সবজির আবাদসহ অন্যান্য চাষাবাদ করতেও নিষেধ করা হয়। 

মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে ভারত সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে দুইটি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এরই প্রেক্ষিতে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে বনবিভাগ এ কর্মশালার আয়োজন করে।

আরও পড়ুন: শেরপুরে ৫ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত: সংঘর্ষে চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ আহত ২০

ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা একেএম রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বন্যপ্রাণি অপরাধ দমন ইউনিট ঢাকার বন সংরক্ষক একেএম জহির উদ্দীন আকন। অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আফরোজা নাজনীন, নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন, নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল, মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিম, নয়াবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুস আলী দেওয়ান, হালুয়াঘাট উপজেলার ভুবনকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সুরুজ মিয়া প্রমুখ। কর্মশালায় এসময় শেরপুর জেলার বালিঝুড়ি, রাংটিয়া ও মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন ২৭ টি এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের (ইআরটি) ২৭০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য,গত ১৯ নভেম্বর নালিতাবাড়ী উপজেলার পানিহাতা সীমান্ত এলাকার মায়াঘাসি গ্রামের ধানক্ষেত থেকে আনুমানিক দু’বছর বয়সী একটি বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ৯ নভেম্বর শ্রীবরদী উপজেলার মালাকোচা পাহাড়ী এলাকা থেকে আরেকটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বনবিভাগের জমিতে অবৈধ দখলদারদের সবজি বাগানের চারিদিকে পাতা বৈদ্যুতিক ফাঁদে বন্যহাতিটির মৃত্যুর অভিযোগে ইতোমধ্যে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছে বনবিভাগ।

ময়মনসিংহ বন বিভাগ এবং শেরপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কার্যালয়ের হিসাব মতে, ১৯৯৫ সাল থেকে এ বছরের ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত ঝিনাইগাতী-শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। আহত হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক লোক। অন্যদিকে মানুষের হাতে মারা পড়েছে ৩১টি বন্য হাতি।

আরও পড়ুন: শেরপুর সীমান্তে বিদ্যুতায়িত করে হাতি হত্যার অভিযোগ

শেরপুর সীমান্তে হাতি আতঙ্কে ঘুম নেই পাহাড়ি অধিবাসীদের