স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সুস্থ্য ও মেধাবী জাতি গঠনে দেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। বাজারে ভেজাল খাদ্য বন্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকা'স ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের আওতায় 'ন্যাশনাল ফুড সিস্টেম প্রায়োরিটিস অ্যান্ড প্রিপারেশন অন দ্য ঢাকা ফুড এজেন্ডা- ২০৪১’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে না পারলে সরবরাহ করা অসম্ভব। ভোক্তা যে পণ্যটি গ্রহণ করছে, সেটির গুণগত মান সম্পর্কে অসচেতন। এক্ষেত্রে ভোক্তার সচেতনতা অনেক জরুরি। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে এই প্রকল্পটি ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ের জন্য গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে। অনিরাপদ খাদ্য কৃষক, ব্যবসায়ী, ভোক্তা সবার জন্যই ক্ষতিকর। খাবার সময় আমাদের খাদ্যমান যাচাই-বাছাই করা উচিত।
আরও পড়ুন: ঢাকাকে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে দেয়া হবে না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তাজুল ইসলাম বলেন, স্ট্রীট ফুড চাইলেই বন্ধ করা যাবে না। তবে এগুলোকে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে। সিটি করপোরেশন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্যের মান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে যা অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখছে। খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ এবং ভেজাল রোধে এই ল্যাবটিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও লোকবল আছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ, ভেজাল খাদ্য বন্ধ, সাধারণ মানুষকে খাদ্য-পুষ্টি বিষয়ে সচেতন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অধিকতর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মানুষের কল্যাণ এবং সার্বিক উন্নয়নে সরকারের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: করোনার মহাসংকটে শেখ হাসিনার কৌশল বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
প্রধান অতিথি আরও জানান, অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ খাদ্যের গুণগত মান নষ্ট করে এবং মানুষের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এ বিষয়ে কৃষকদেরও বেশি সচেতন করতে হবে। কীটনাশকের ব্যবহার সম্পর্কে অনেকে অবগত নন। উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থাপনা একটি জটিল বিষয়। সে জন্য প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।
পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রতিবছরই গরমকালে দেশে ডায়রিয়ার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এব্যাপারে তাৎক্ষণিক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। অনিরাপদ পানি ডায়রিয়া রোগের একটি কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সারাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহে কাজ চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: জেলা পরিষদকে আরও কার্যকর করতে আইন সংশোধন হচ্ছে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আসন্ন মৌসুমে এডিসসহ অন্যান্য মশা নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে সভা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এডিস মশা নিধনে সিটি করপোরেশন কাছে প্রয়োজনীয় কীটনাশক, জনবল এবং যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত এনে ভ্যান লিউয়েন, রবার্ট ডি সিম্পসন অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া, প্রকল্প পরিচালক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরীসহ এ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তা এবং খাদ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।