ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যায়ামাগারে গোপনে ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় এক নারীসহ তিনজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর ৯৯৯-এ কল করলে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
বুধবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস ক্লাব নামে একটি জিমে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া বিপ্লব, জিমের ফিটনেস ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় রাতেই গ্রেপ্তার তিনজনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৮/৯ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন ওই নারীর ভাসুর।
লিখিত অভিযোগ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ও তার বোন শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস সেন্টারে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। সেখানে মেয়েদের ব্যায়াম করার আলাদা ব্যবস্থা থাকায় দুই বোন সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে জিমের ট্রেইনার মিতু আক্তার গোপনে ভিডিও ধারণ করেন বলে তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা নিশ্চিত হন ট্রেইনার মিতু গোপনে তাদের ভিডিও ধারণ করেছে। বুধবার বিকালে তারা দুই বোন ট্রেইনার মিতুকে ভিডিও করার কথা জিজ্ঞেস করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ট্রেইনার মিতু জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া বিপ্লবকে জানায়।
এই খবর পেয়ে বিপ্লব তাদের দুই বোনের কাছে যান মিতুকে নিয়ে। সেখানে মিতু ওই নারীকে মারধর শুরু করেন।
আরও পড়ুন: সাঈদীর মৃত্যুতে ফেসবুকে পোস্ট: কিশোরগঞ্জে ছাত্রলীগের ৭ নেতাকে অব্যাহতি
একপর্যায়ে জিমে থাকা শহরের উত্তর পৈরতলার সোহেল মিয়া তাদের বাঁচাতে এলে বিপ্লবসহ তার সহযোগীরা তাদের সবাইকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে আটকে রাখে। আশপাশের সড়কে উৎসুক মানুষ জমায়েত হয়ে ভিডিও করে ঘটনাটি ফেসবুকে দেয়।
শেষে ৯৯৯- এ কল পেয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে। গুরুতর আহত হওয়ায় ওই নারী ও সহায়তা করতে আসা সোহেলকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এরপর জিমের পরিচালক বিপ্লব, ট্রেইনার মিতু ও সাইমকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া বিপ্লব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভিডিও ধারণের বিষয়ে একজন নারীর ফোন পেয়ে ব্যায়ামাগারে যাওয়ার সময় সোহেল নামে একজন ফোন করে গালিগালাজ করে। কয়েকজন লোক নিয়ে ব্যায়ামাগারে আসেন। ব্যায়ামাগারে ভাঙচুর দেখে সোহেলকে আটক করা হয়। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নেওয়ার সময় পেছন থেকে আমাকে ছুরিকাঘাত করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন জানান, জিমে দুই বোনের ছবি উঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ওই জিমের মালিক ও ট্রেইনার পক্ষের লোকজনদের সঙ্গে ওই দুই নারীর পরিবারের লোকজনদের ঝগড়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হন।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া বিপ্লবসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।