মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার অঙ্গীকার নিয়ে শনিবার বাংলাদেশে ৫২তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হবে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিরস্ত্র বাঙালির বিরুদ্ধে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পর ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
৩০ লাখ মানুষের প্রাণ এবং দুই লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ২১ বার তোপধ্বনি ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হবে।
সকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ নাটক ‘নিহত নক্ষত্র’
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সব ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হবে।
জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ সম্প্রচার করবে এবং বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেসরকারি রেডিও স্টেশন এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিশু একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং অন্যান্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন শিশুদের জন্য সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাঙ্কন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ওপর চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবে।
মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে সম্মাননা দেয়া হবে। বাংলাদেশ ডাকঘর বিভাগ দিবসটি উপলক্ষে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করবে।
এদিকে দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহফিল করবে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন।
দিবসটির প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ-বিদেশে থাকা সকল বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২’ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, ‘স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের অবশ্যই জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন, সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য সহনশীলতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সুসংহত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নিশ্চিত করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘আমরা সৌভাগ্যবান যে একই সঙ্গে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতির পিতা মুজিব বর্ষের ২০২০-২১ সালের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে পেরেছি।’
তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ লালন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মমর্যাদাপূর্ণ ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়তে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি মোকাবিলার শপথ নিয়ে আ. লীগের বিজয় শোভাযাত্রা