রাজধানীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টোপথে আসা মোটরসাইকেল আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আইনজীবীসহ পাঁচজনের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
অন্যদিকে মামলার অপর আসামি আইনজীবী ইয়াসিন জাহান নিশান ভুঁইয়ার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রিমান্ডে যাওয়া পাঁচ আসামি হলেন- আইনজীবী সোহাকুল ইসলাম রনি, আইনজীবী ইয়াসিন আরাফাত ভুইয়া, মো. শরিফ, মো. নাহিদ ও মো. রাসেল।
বুধবার মামলায় গ্রেপ্তার ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করে পাঁচ আসামির সাতদিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্যামপুর থানার পরিদর্শক খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ।
অপর মহিলা আসামি আইনজীবী ইয়াসিন জাহান নিশান ভুইয়াকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় পুলিশ কনস্টেবল নিহত
অন্যদিকে আসামিদের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন আসামি নিশানের জামিন মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে পাঁচ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আইনজীবীদের গ্রেপ্তারের খবরে তাদের সহকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে এসে ভিড় করেন। এজলাস এবং এর বাইরে আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে যায়। তারা আইনজীবীদের জামিন চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশের বিরুদ্ধেও তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। হৈচৈ’র কারণে আদালতের বিচারকাজ বিলম্ব হয়। বিচারক ৩টা ৫ মিনিটের দিকে এজলাস থেকে নেমে যান।
এরপরও আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক ও বর্তমান নেতারাও আসেন শুনানিতে। তারা আইনজীবীদের শান্ত থাকতে বলেন।
এরই মাঝে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আসামিদের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী কাজী নজিব উল্যাহ হিরু, এহেসানুল হক সমাজীসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: কেরানীগঞ্জে প্রিজন ভ্যানে বাসের ধাক্কায় ১৭ বন্দি ও ২ পুলিশ আহত
এর আগে মারধরের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে শ্যামপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সাড়ে চারশোজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জুরাইন রেলগেট সড়কের উল্টোদিক দিয়ে স্বামী ইয়াসিনের সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে আসছিলেন আইনজীবী নিশাত। এসময় সার্জেন্ট আলী হোসেন ও ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজ তাদের গতিরোধ করেন।
নিশাত নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে সার্জেন্ট আলী হোসেনের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে ইয়াসিন মোটরসাইকেল থেকে নেমে সার্জেন্ট আলী হোসেনকে ধাক্কা দেন। এসময় আইনজীবী নিশাত চিৎকার শুরু করলে পাঠাও ও অটোচালকরা সার্জেন্ট আলী হোসেনের ওপর হামলা করেন।
খবর পেয়ে শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উৎপল দত্ত অপুসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে এবং ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর করে। পরে আহত পুলিশ সার্জেন্ট আলী হোসেনসহ তিন পুলিশ সদস্যকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এতে আহত সার্জেন্ট আলী হোসেনের হাতে ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে। তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন: পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগে রাজশাহীতে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা