বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সাথে সাক্ষাৎ করে রোহিঙ্গা সংকটের পাশাপাশি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়েও কথা বলেন।
বৈঠক শেষে ঢাকার চীনা দূতাবাসের মিনিস্টার (কাউন্সেলর) ও মিশন উপপ্রধান ইয়ান হোলং ইউএনবিকে বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত লি বাস্তুচ্যুত মানুষদের (রোহিঙ্গা) শিগগির প্রত্যাবাসন এবং তাদের নিজ দেশে ফেরার আগেভাগের তারিখ নিয়ে অধিকতর আলোচনা করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।’
এদিকে, রাষ্ট্রদূত লি বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার এবং ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবে মিল্লাতের সাথেও সাক্ষাৎ করেন। এ সময় উভয়পক্ষ বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার মানবিক সহযোগিতা এবং রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে শিগগির প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা করেন।
নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে প্রস্তুত থাকলেও মিয়ানমার অপপ্রচার ও মিথ্যা ছড়াচ্ছে যে বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে ‘অনিচ্ছুক’।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যাতে আরম্ভ হয় তা নিয়ে আলোচনায় রয়েছে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার। তিন দেশ মিলে চালু করেছে ত্রিপক্ষীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং মেকানিজম। এতে সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীন ও মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইংয়ের ডিজি। এ উদ্যোগের প্রথম বৈঠকে সফলভাবে অভিন্ন ভিত্তি চিহ্নিত করা হয়েছে বলে ঢাকার চীনা দূতাবাস জানিয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যে সামরিক অভিযান থেকে বাঁচতে কক্সবাজারে প্রবেশ করেছেন।
রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে মিয়ানমারের ‘ব্যর্থতা’ এবং রাখাইন রাজ্যে অনুকূল পরিবেশের অভাবে গত দুই বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও প্রত্যাবাসন করা যায়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার নাম যাচাইয়ের জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর এবং নিজেদের পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করেছে। তবে মিয়ানমার এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে পারেনি।
চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যাচাই করা ৩,৪৫০ রোহিঙ্গা, হিন্দু রোহিঙ্গা ও যারা ‘শূন্য রেখায়’ বাস করছেন তারা দ্রুত প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারে আছেন।