পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সুসংবাদ আসেনি তবে তারা সে লক্ষ্যে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (চীনা রাষ্ট্রদূত) এখনও কোনো সুসংবাদ দেননি।’
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন বলেন, তিনি বাংলাদেশের প্রত্যাশার বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি এসময় আরও উল্লেখ করেছেন যে অনেক সময় অতিবাহিত হয়েছে। শিগগিরই প্রত্যাবাসন শুরু হবে, এমনটিই আশা করছে ঢাকা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: বেইজিংয়ের প্রচেষ্টার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে ঢাকা
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কোনও তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।
বর্তমান মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সাক্ষরিত পূর্ববর্তী সকল চুক্তিকে ‘সম্মান’ করে এবং যাচাই-বাছাই শেষে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, মিয়ানমার পক্ষ এখনও বলছে তারা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেবে এবং একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সদিচ্ছার অভাব দেখা যাচ্ছে।
জটিলতার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেশিরভাগ রোহিঙ্গা নির্যাতিত হওয়ায় কোনও কাগজপত্র ছাড়াই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
মোমেন বলেন, এখন মিয়ানমার-বংশোদ্ভূত নথির ওপর জোর দিচ্ছে মিয়ানমার সরকার। ‘এটা একটা বড় সমস্যা।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের জান্তা সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছুক: মোমেন
যাচাই-বাছাই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমার পক্ষ যাচাই-বাছাইয়ের পর কয়েকজন রোহিঙ্গাকে অনুমোদন দিলেও সমস্যা হলো তালিকা তৈরির সময় তারা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন। ‘আপনি যদি নেন তবে আপনাকে পুরো পরিবারকে নিতে হবে। অন্যথায় আপনি একটি পরিবারকে বিভক্ত করলে এটি টেকসই হবে না।’
মোমেন বলেন, মিয়ানমার পক্ষ যদি সত্যিই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে চায়, তাহলে তাদের নথি চাওয়া বাদ দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমার আলোচনা (বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে) মিয়ানমার এবং রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে। আমরা মনে করি চীন মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে।’
মোমেন বলেন, চীনা পক্ষ সমাধান খুঁজতে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। ‘তারা (চীন) সুবিধাদাতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নয়। আমরা তাদের বারবার অনুরোধ করছি।‘
বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার অধীনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
চার বছর আগে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ, চীন এবং মিয়ানমারের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার ধারণা এসেছিল। সে সময় পটভূমি ও পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে এবং দ্রুত প্রত্যাবাসনে পদক্ষেপ নিতে কয়েকটি বৈঠক হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সবসময় একই দাবি করে: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব | UNB