শরীয়তপুরের জাজিরায় অপহরণের পর এক স্কুলছাত্রকে হত্যা মামলায় সাত আসামির মধ্যে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকি চার আসামিকে বেকসুর খালাস এবং একজনের রায় স্থগিত রাখা হয়েছে।
নিহত স্কুল ছাত্রের নাম শাকিল মাদবর। সে উপজেলার পূর্ব নাওডোবা হাজী কালাই মোড়লকান্দির এলাকার ছালাম মাদবরের ছেলে এবং স্থানীয় আ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের নাম ইমরান মোড়ল ও সাকিব বাবু।
খালাস প্রাপ্তরা হলেন- আক্তার মাদবর, সজিব মাঝি, মহসিন হাওলাদার ও স্বপন সরদার।
আরও পড়ুন: সিলেটে কলেজছাত্র হত্যা: ১ জনের মৃত্যুদণ্ড
আর আসামি বাবু ফরাজীর উচ্চ আদালতে আপীল থাকায়, তার রায় স্থগিত রাখা হয়েছে। উচ্চ আদালতের আপীল নিস্পত্তি হলে বাবু ফরাজীর রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল।
জানা যায়, ক্রিকেট খেলার নাম করে ২০২০ সালের ২৫ জুন শাকিল মাদবরকে অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবীতে শাকিলকে হত্যা করে পদ্মা সেতুর ৩৯ নং পিলারের নিকট মাটিতে পুঁতে রাখে অপহরণকারীরা। এ বিষয়ে শাকিলের বাবা ছালাম মাদবর জাজিরা থানায় অভিযোগ করে। অভিযোগের ভিত্তিতে শাকিলকে ক্রিকেট খেলতে ডেকে নেয়া সাকিব বাবুকে আটক করে পুলিশ। এরপর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব বাবুর দেখানো জায়গা থেকে শাকিলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এরপর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সাত জনকে আসামি করে জাজিরা থানায় মামলা হয়। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আ. ছালাম খান আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: পরকীয়ার জেরে হত্যা, নারীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড
রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ উভয়ই এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
মামলার বাদী ছালাম মাদবর বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে অন্যান্যদের আসামি করা হয়েছে। সেই মামলায় আজ দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে, অন্যান্যদের খালাস দিয়েছেন আদালত। আমি এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছি। আমি উচ্চ আদালতে যাবো।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পিপি এডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, একটি লোমহর্ষক ঘটনা ছিল। আাসমিরা মুক্তিপনের দাবীতে শাকিল মাদবর নামে এক কিশোরকে অপহরণ করে হত্যা পরবর্তী লাশ গুম করে। সেই মামলায় আসামীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেই অন্যান্যরা আসামি হয়েছে। আজ দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে অপর চার জনকে খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আসামি বাবু ফরাজীর পক্ষে উচ্চ আদালতে আপলীল থাকায় তার রায় স্থগিত রাখা হয়েছে। বাদী উচ্চ আদালতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। আমি তার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করছি।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মুরাদ বলেন, আমার আসামি ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়েছে। তাই ন্যায় বিচার প্রত্যাশায় উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেব।