আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়ে ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, 'আমি চাই এই নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক।৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সুষ্ঠু জবাব দেব, যাতে কেউ বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র চলছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অনেকেই এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে যাতে দেশে নির্বাচন না হয় কারণ তারা তৃতীয় দলকে ক্ষমতায় আনতে চায়।

আরও পড়ুন: বিএনপি মানুষ পোড়ায়, বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই তাদের: বরিশালে প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তৃতীয় পক্ষ কী করতে পারে? তারা দেশের কোনো উন্নয়ন করতে পারে না। আপনারা দেখেছেন ২০০৭ সালে তারা কী করেছিল।’

ফিলিস্তিনের হাসপাতালগুলোতেও ইসরায়েল বোমা হামলা চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারেক জিয়া লন্ডন থেকে বাংলাদেশে অ্যাম্বুলেন্স, সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়ে ঠিক একই কাজ করছেন।

তিনি বলেন, এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি বলেন, 'যদি আল্লাহ চান এবং আমরা আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে লন্ডনে অবস্থান করে আমাদের দেশের জনগণের ক্ষতি ও মানুষ হত্যার আদেশ দেন তা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে তাকে সেখান থেকে (দেশে) এনে শাস্তি দেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন: নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে বরিশালে প্রধানমন্ত্রী, নগরীতে উৎসবমুখর পরিবেশ

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোট চান তিনি। ভোটারদের সকালে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, 'আপনারা সকালে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে বিশ্বকে দেখান যে, আমরা জানি কীভাবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করতে হয়। আমরা এটা করতে পারি। আমরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি।’

তারেক জিয়াকে তীব্র আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি লন্ডন থেকে আদেশ দিয়ে মানুষকে হত্যা করেন এবং ট্রেন, বাস ও মানুষ পোড়ান। তিনি বলেন, তারেক একজন খুনি, অস্ত্রধারী ও অর্থ আত্মসাৎকারী, যিনি লন্ডনে জুয়া খেলার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেছেন।

তিনি বলেন, বিএনপির যেসব নেতা তার নির্দেশে এখানে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করছে, তাদেরই মানুষ হত্যার দায় নিতে হবে।

আরও পড়ুন: জানুয়ারির নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপি নেতারা কেন এমন বিকারগ্রস্ত ব্যক্তির নির্দেশে অগ্নিসংযোগ করছে, মানুষ হত্যা করছে? এটা আমার প্রশ্ন। তারাই শাস্তির মুখোমুখি হবে।’

তিনি বলেন, মানুষ হত্যার জন্য অপরাধীরা পরকালেও শাস্তি পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের জনগণ বিএনপিকে বিশ্বাস করে না, যা ২০০৮ সালের নির্বাচনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তখন বিএনপি মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল এবং আওয়ামী লীগ একাই ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৩৩টি আসন পেয়েছিল।

তিনি বলেন, 'এ কারণেই আওয়ামী লীগ যখন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে তখন তারা বারবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু জনগণের সমর্থন না থাকায় তারা সফল হবে না।’

টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীকে ভোট চান।

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনারা যেহেতু আমার দেখভাল করেন, তাই আমি বাংলাদেশের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার দেখভাল করতে পারি। এটি আমার জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন, কারণ বাংলাদেশে আমার মতো ভাগ্যবান আর কোনো প্রার্থী নেই।’

আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের উপর হামলাকারীরা রেহাই পাবে না: প্রধানমন্ত্রী