সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা আরও বলেন, ডিজিটাল ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিএসএ বাতিল করে নাগরিক সমাজের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সরকার একটি নতুন আইন করতে পারে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ৫ দিন সংবাদপত্র প্রকাশিত হবে না
রবিবার নিউজ নেটওয়ার্ক রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকায় এনজিও ফোরামের ট্রেনিং হলে ইন্টারনিউজ ও এনগেজমিডিয়ার সহযোগিতায় ‘সাইবারস্পেস, সাইবার আইন ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে অ্যাডভোকেসি ক্যাম্পেইন’- শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে গবেষক, মানবাধিকার কর্মী ও আইন বিশেষজ্ঞ রেজাউর রহমান লেনিন বলেন, ডিএসএ একটি দমনমূলক আইন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করার অস্ত্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই আইনের অনেক ধারা সংবিধান ও জাতিসংঘ স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এই আইনটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও বাধা।’
লেনিন উল্লেখ করেছেন যে ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত ডিএসএ-এর অধীনে মোট এক হাজার ১২৯টি মামলা করা হয়েছে।
এর মধ্যে ৩০১টি মামলা রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে এবং ২৮০টি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এবং ১৫৭টি শিক্ষক ও ছাত্রদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, মামলার আসামিদের অধিকাংশই বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছেন। ‘ডিএসএ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বেশিরভাগ লোক প্রাথমিক পর্যায়ে জামিন পাননি। কিছু লোককে এমনকি ডিএসএ মামলায় জামিন পেতে এক বছর জেলে থাকতে হয়েছে।’
ডিএসএর অপব্যবহার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেলেও সরকার এ আইন সংশোধনে আন্তরিক নয় বলে জানান তিনি।
তাছাড়া, শুধু আইন সংশোধন করলেই তা উত্থাপিত সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে পারবে না।
লেনিন জানান, ‘সরকার শুধু আইন সংশোধনের আশ্বাস দিচ্ছে, কিন্তু এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। আসলে আইনের সংশোধনই যথেষ্ট নয়। এই আইন অবিলম্বে বাতিল করা উচিত।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নিউজ নেটওয়ার্কের সম্পাদক ও সিইও শহীদুজ্জামান এবং এর প্রোগ্রাম অফিসার রেজাউল করিম। বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ১২ জন সিনিয়র সাংবাদিক কর্মশালায় যোগ দেন এবং মিডিয়া শিল্পে ডিএসএর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে তাদের মতামত বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য আইসিটি আইন করা হয়নি: আইনমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর নাম সংবাদপত্রে ছাপাতে বাধা দিয়েছিল জিয়া সরকার: খালিদ